প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে ফেসবুক-টুইটার বন্ধ রাখা হবে : শিক্ষামন্ত্রী
তরিকুল ইসলাম সুমন : পয়েলা ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে ফেসবুক-টুইটারসহ সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তবে কত খন বন্ধ রাখা হবে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট তথ্য দিতে পারেন নি শিক্ষামন্ত্রী। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) এবং আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। একটা নির্দিষ্ট সময় ফেসবুক বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছি। কতক্ষণ বন্ধ থাকবে সে টাইমটা মেনশন করছি না, আলাপ করে পরে জানানো হবে।
শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, আমি ফেসবুক বলতে বুঝিয়েছি প্রযুক্তিগত বিষয়গুলো। আমি কেবল একটার নাম উল্লেখ করেছি। প্রযুক্তিগত যে সুযোগগুলো তারা (প্রশ্ন ফাঁসকারী) নেয় সেগুলো যাতে বন্ধ করা যায়। তারাও (বিটিআরসি) চিন্তা করছেন কী কী মাধ্যমে এটা হতে পারে। কীভাবে এগুলো বন্ধ করা যেতে পারে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এটা লিমিটেড টাইমের জন্য হলে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। দুই তিন ঘণ্টায় কিছু হবে না।
এরআগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর তিনদিন আগে থেকে শুরু করে সব পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত দেশে সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে বলেও সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেন, পরীক্ষা শুরুর নির্ধারিত সময় সকাল ১০টা। এর আধা ঘণ্টা আগে অর্থাৎ সাড়ে ৯টার মধ্যে পরীক্ষার্থীদের নিজ নিজ আসনে বসতে হবে। এর পরে কেউ এলে তাকে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। রাস্তায় যানজট হতে পারে এটি বিবেচনা করে আগেই পরীক্ষার্থীদের আসতে হবে। কোনো অযুহাত মানা হবে না।
শিক্ষা মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে পরীক্ষার ৩০ মিনিট আগে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলে তা বণ্টন করতে হবে। এর এক মিনিট আগেও প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা যাবে না। কেউ খুলে ফেললে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রশ্নপত্রের প্যাকেট কেউ আগে খোলা হয়েছে কিনা তা তদারকি করতে নির্ধারিত একটি টিম থাকবে। এই টিম কেন্দ্রে কেন্দ্রে গিয়ে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবে। কোথাও প্রশ্নপত্র আগে খোলা হলে ওই কেন্দ্রের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে মন্ত্রী পরিভদ বিভাগ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক পৃথক চিঠি দিয়ে জেলা প্রশাসক এবং ইউএনওকে জানানো হবে তারাই পরীক্ষা কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ টিমের দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত ক্যালকুলেটর ছাড়া অন্য কোনো উলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে হলে প্রবেশ করা যাবে না। কেন্দ্র সচিবকেও অফিস ব্যববহারের জন্য সনাতন মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। এর ব্যতয় হলেই তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি আরো বলেন প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে কোচিং সেন্টারের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। একারণে পরীক্ষান তিন দিন আগ থেকে পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সকল কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা হবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন পরীক্ষা প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে সরকারকে। এ কারণেই এ উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।