পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করা একটি কঠিন কাজ
এজহারুল হক
আমাদের অভিজ্ঞতার আলোকে যেটা দেখছি, এই প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে এক ধরনের অসাধু, দুর্নীতিপরায়ণ ও অর্থলোভী লোক জড়িত থাকে। যারা কেন্দ্রের সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্ট। সরকারী নির্দিষ্ট ট্রেজারী অথবা যেখানে প্রশ্ন থাকে সেখান থেকে নেওয়ার পরে ঐ ধরনের কিছু অসাধু লোক অফিসের যেখানে প্রশ্ন রাখে বা যেখান থেকে প্রশ্ন খুলে সেখান থেকেই প্রশ্নপত্র ফাঁস করে। এক্ষেত্রে করণীয় হলো, সরকারের কোন বড় ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করতে পারবে তার কোন সম্ভাবনা নেই, যতক্ষন না পর্যন্ত যারা এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল তাদের মধ্যে সচেতনতা না আসবে। যে প্রতিষ্ঠান থেকে এই প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে বলে প্রমাণিত হবে সে প্রতিষ্ঠানের বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করে সামনের দিকে যেন কেউ এই ধরনের কাজ না করে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া কোন দিনও প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ সম্ভব নয়। এখন আমার প্রশ্ন হলো তথ্য প্রযুক্তিতে এত আইন কেন ? যেখানে কেউ রেহায় পায় না, যেখানে কেউ কোন নেতা নেত্রীর বিরুদ্ধে মন্তব্য করলে ধরা পড়ে যায় । কিন্তু প্রশ্নপত্রের মত গুরুত্বপূর্ণ এত বড় ঘটনায় কেন তারা বার বার পার পেয়ে যায়? তারা ধরতে পারে না, এটা আমার দৃষ্টিতে একটা অসম্মানজনক নেককার কাজ বলে মনে হয়। আমার বিশ্বাস, সরকার চাইলে পারে না, এমন কোন কিছু নেই। এখন প্রযুক্তির এই যুগে, ফেসবুক থেকে খুঁজে বের করা তো অনেক অংশেই সহজ। তাহলে তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।
ফেসবুক বন্ধ করে যে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করতে চাচ্ছে, তাতে আমার মনে হয় না এটা রোধ করা সম্ভব হবে। আমি দুই লাখ মানুষের জন্য সারা দেশের মানুষের যোগাযোগ বন্ধ করতে পারি না। একটা শ্রেণীর মানুষের উপকার করতে গিয়ে অর্থাৎ প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে গিয়ে যে কত ধরনের মানুষের ক্ষতি হচ্ছে সেটাও বুঝতে হবে। যে অদৃশ্য কারণে সরকারের একটি কর্তৃপক্ষ বলে প্রশ্নপত্র মিলেনি। এটা তো এক প্রকারে তাদেরকে সহযোগীতা করা মতো হয়ে গেল। দেশের লাখ লাখ শিক্ষক এর সাথে জড়িত নয়। বরং সুনির্দিষ্ট একটি অপরাধী চক্র, যারা সরকারের সাথে এক ধরনের চ্যালেঞ্জ দিয়ে এধরনের কাজগুলো করছে। এখন সরকারের উচিত এধরনের চক্রকে অতি দ্রুত খুঁজে বের করা।
পরিচিতি : অধ্যক্ষ, গাউছিয়া ইসলামিয়া ফাযিল মাদ্রাসা
মতামত গ্রহণ : শাখাওয়াত উল্লাহ
সম্পাদনা : গাজী খায়রুল আলম