ইতিহাসের শিক্ষা আমীরুল ইসলাম কাগজী
ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে শাসকদের কোপানলে পড়েন গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিস। ৫০০ জন জুরি নিয়ে গঠিত আদালতে এক প্রহসনমূলক বিচারের মুখোমুখি হতে হয় তাকে। চূড়ান্ত বিচারে দোষী সাব্যস্ত করে সক্রেটিসকে দেওয়া হয় মৃত্যুদ-। সিদ্ধান্ত হয় হেমলক বিষপানে মৃত্যুদ- কার্যকর করার । খ্রিস্টপূর্ব ৩৯৯ অব্দে ঘটে সেই মর্মান্তিক ঘটনা।
বিচার শেষে সক্রেটিসের কিছু মন্তব্য প্রায় আড়াই হাজার বছর পরও কেন যেন সভ্য সমাজকে নাড়া দিয়ে যায় বার বার। তাই আজ তার সেই উক্তিগুলো এখানে তুলে ধরছি। বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমাকে মৃত্যুদ- দিয়ে আপনারা ক্ষনস্থায়ী খ্যাতি হয়তো পেতে পারেন, কিন্তু কিছুদিন পরেই “জ্ঞানী সক্রেটিসকে” হত্যার দায়ে আজকের নিন্দুকেরাই আপনাদিগকেই দোষারোপ করবে। আপনারা আর কয়েকটা দিন অপেক্ষা করলেই আপনাদের এ ইচ্ছে এমনিতেই পূরণ হতো। আপনার তো দেখতে পাচ্ছেন জীবন পথে মৃত্যুর সীমান্ত থেকে বেশি দূরে নই আমি। আমার এ কথা সবার উদ্দেশে নয়; কেবলমাত্র তাদের জন্য যারা আমার মৃত্যুদ- দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।”
সক্রেটিস বলেন, “আপনাদের মধ্যে যারা আমাকে মৃত্যুদ- দেওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন, তাদের কিছু ভবিষ্যদ্বাণী করে যেতে চাই, আপনাদের বলতে চাই আমার তিরোধানের সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যুদন্ডের চেয়েও কঠিন শাস্তি আপনাদের উপর নিপতিত হবে। আত্ম সমালোচনা থেকে বাঁচার জন্য আপনারা আমাকে হত্যা করছেন, কিন্তু আমি বলছি এর বিপরীত ফল আপনারা ভোগ করবেন।
আপনারা আরও বেশি সংখ্যক অভিযোগকারীর সম্মুখীন হবেন, যাদের আমি আপনাদের অজ্ঞাতসারে দমিয়ে রেখেছিলাম। আর যেহেতু তারা বয়সে তরুন, তারা আরও কঠিন হবে এবং ক্ষুব্ধ হবে।”
সবশেষে সক্রেটিস বিচারকদের বলেন, আপনাদের উপর আমার কোনো ক্ষোভ নেই, অভিযোগও নেই। কারণ, আপনাদের নিয়োগ দিয়েছে রাষ্ট্র, আর বিধান করে দিয়েছে মৃত্যুদ-।
পরিচিতি : সিনিয়র সাংবাদিক/ ফেসবুক থেকে