বাংলাদেশে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয় নূহ-উল-আলম লেনিন
বেগম খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে, বিএনপির নেতারা অভিযোগ করেছেন, এই রায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। বিএনপির এই মন্তব্য আদালতের রায়ের প্রতি অশ্রদ্ধা,আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা, বিচার বিভাগের প্রতি অশ্রদ্ধারই বহিঃপ্রকাশ। তাদের নেত্রী যদি প্রকৃতই দোষী না হন, তাহলে তো আদালত এই রায় দিতেন না। এর পরেও সুযোগ আছে উচ্চ আদালতে আপিল করে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার। উচ্চ আদালতে যদি তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন, তাহলে অবশ্যই দেশবাসী তাকে অভিন্দন জানাবে। আর যদি এই রায় বহাল থাকে তবে বুঝতে হবে বাংলাদেশে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। বিচার তো আওয়ামীলীগ করেনি, বিচার তো সরকারও করেনি। বিচার করেছে আদালত। এই মামলা আওয়ামী লীগও দায়ের করেনি। মামলা দায়ের করেছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার। একদিন দুই দিন নয়, দশ বছর এই মামলার শুনানি হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে বার বার হাইকোর্ট আদালত পরিবর্তন করেছে। বিচারক পরিবর্তন করেছে। অমুক স্বাক্ষীকে মানিনা, অমুককে পছন্দ করি না।
এসব অভিযোগ করে তারা কালক্ষেপন করেছেন। আমাদের মতো কোনো সাধারণ নাগরিক যদি হতো, তাহলে আদালত কি একটি বিচারের রায়ের জন্য দশ বছর এভাবে সুযোগ দিত ? তাকে সর্বোচ্চ সুযোগ দিয়ে আদালত রায় দিয়েছে। আমরা আদালতের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি আওয়ামী লীগ হিসেবেও মনে করি না এই রায় আমার খুব উৎফল্লিত হবার বিষয়। সরকার হিসেবে আমি মনে করি, সরকারের দায়িত্ব ছিল সকল নাগরিক যাতে ন্যায় বিচার পায়। আইন সবার জন্য সমান। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয় তা প্রমাণ হয়েছে। আদালত যখন কোন রায় দেয়, তাতে তো সামনে নির্বাচন কিনা বিবেচনায় রেখে রায় দেয় না। এই রায় সরকারও দেয়নি, নির্বাচন কমিশনও দেয়নি। এই রায় দিয়েছে আদালত। আদালত তো এই মামলা অনন্তকাল চালু রাখতে পারে না। খালেদা জিয়া আপিল করে জামিনও নিতে পারেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগও পেতে পারেন। হাইকোর্ট ইচ্ছে করলে, সে সুযোগ তাকে দিতে পারে।
পরিচিতি : সভাপতিম-লীর সদস্য, আওয়ামী লীগ
মতামত গ্রহণ : মাহবুবুল ইসলাম
সম্পাদনায় : গাজী খায়রুল আলম