পূর্বঘোষণা ছাড়াই ব্যবসায়ের খতিয়ান প্রকাশ করেছে ফ্যামিলিটেক্স!
ফয়সাল মেহেদী : পূর্বঘোষণা ছাড়াই ফের ত্রৈমাসিকের আয়-ব্যায়ের খতিয়ান প্রকাশের অভিযোগ উঠেছে ফ্যামিলিটেক্স বিডি লিমিটেডের বিরুদ্ধে। এর মাধ্যমে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লিস্টিং রেগুলেশন ভঙ্গ করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এর আগেও একই আইন একাধিক বার ভেঙ্গেছে বস্ত্র খাতের এই কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ।
ডিএসই’র লিস্টিং রেগুলেশন- ২০১৫ এর ধারা ১৬ এর উপ-ধারা ১-এ বলা আছে, তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির আর্থিক ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করণ এবং অন্তরবর্তী কালীন ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত বোর্ড সভার জন্য নির্ধারিত তারিখের তিন দিন পূর্বে স্টক এক্সচেঞ্জ এবং কমিশনকে জানাতে হবে। অর্থাৎ বোর্ড সভার নির্ধারিত তারিখের তিন দিন আগেই বোর্ড সভার ঘোষণা দিতে হয়। অভিযোগ রয়েছে, ডিএসই’র মাধ্যমে গতকাল ১১ ফেব্রুয়ারি চলতি হিসাব বছরের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ফ্যামিলিটেক্স কর্তৃপক্ষ। তবে প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদন সংক্রান্ত বোর্ড সভা কবে-কখন অনুষ্ঠিত হয়েছে তার কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। যা লিস্টিং রেগুলেশনের সুস্পস্ট লঙ্ঘন। এদিকে নির্ধারিত সময়ে প্রান্তিক প্রতিবেদন প্রকাশের ক্ষেত্রের অনিয়ম করেছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ। এর আগের অর্থবছরের প্রান্তিকগুলোতেও একই ধরণের অনিয়ম করেছে কোম্পানিটি। তবে বারবার আইন ভাঙ্গলেও কোম্পানির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি স্টক এক্সচেঞ্জ বা নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’ ১৭) কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) করেছে ০.০০২ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিলো ০.০০৬ টাকা। আর দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর’ ১৭) শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ০.০০৩ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে আয় ছিলো ০.১৩৪ টাকা। এই দুই প্রান্তিক মিলে অর্ধবার্ষিকে (জুলাই-ডিসেম্বর’ ১৭) শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ০.০০১ টাকা। এর আগের বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় ছিলো ০.০১৪ টাকা।
সার্বিক বিষয়ে জানতে কোম্পানির ওয়েবসাইটে দেওয়া টেলিফোন নাম্বারে ফোন দেয়া হলে প্রাত্যাশিত কোনো উত্তর মেলেনি। কোম্পানি সচিবের ইমেইলে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ঋণ পরিশোধের জন্য ২০১৩ সালে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ফ্যামিলিটেক্স বিডি লিমিটেড। তালিকাভুক্তির পর থেকেই মুনাফা ধারাবাহিকভাবে কমে বর্তমানে লোকসানে রয়েছে কোম্পানিটি। এর জেরে দীর্ঘদিন ধরে ফেসভ্যালু বা অভিহিত মূল্যের নিচে লেনদেন হচ্ছে কোম্পানিটির শেয়ারদর।
জানতে চাইলে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কর্মকর্তারা বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোম্পানিগুলো কমিশনের নজরদারিতে রয়েছে।