টিনএজারদের মাদকাসক্তি, দোষ কার?
সোহেল রানা
অভিজাত এলাকায় টিনএজদের সিগারেটের আসক্তি ভয়াবহ রকমের বৃদ্ধি পেয়েছে। ওদের যেটা পাওনা সেটুকু না পেলে ওরা যা ইচ্ছে তাই করবেই। পিতামাতার কর্তব্য এই বয়সে তাদের প্রতি বেশি করে খেয়াল রাখা। দেখা যায় বাবা ব্যবসার কাজে বিদেশে যাচ্ছে, আর মা সমাজসেবা করছে। যে সময়টায় ছেলে মেয়েকে গল্প শুনানোর কথা। ছেলে মেয়েকে ভালোবাসার কথা, যে সময়ে ছোট ছোট আব্দার শোনার কথা, সে সময়টা তারা দিতে পারছে না। বাবা-মা যখন কিছু দিতে পারছে না, তখন তোমার যা খুশি তুমি তাই করছো। বাবা মা বিল্ডিং বানাচ্ছে। কিশোর বয়সে ভালো কোনো খেলাধুলা নেই। কোনো ভালো বন্ধু নেই। বেশির ভাগ ছেলেমেয়ে ঘরের চার দেয়ালের মধ্যে বড় হচ্ছে। বাচ্চারা কাজের লোকের কাছে বড় হচ্ছে। তারা কি শিখছে? ভালোবাসাটাই তো শিখছে না। সামাজিক বন্ধন সম্বন্ধে জানছে না। স্কুলে যায় ড্রাইভারের সাথে। বাসায় ফিরে বুয়ার কাছে। বাবা মা কোথায়? আগে যেমন স্কুলে নকল করলে সারা স্কুল জেনে যেতো। কেউ তার সঙ্গে মিশতো না। সবাই তাকে ঘৃণা করতো। এসব কথা বলার মত লোকও তো তাদের নেই। বাবা মায়ের কাছে বলবে, তাদের সেই সময় কই? বাবা মায়ের দায়িত্বটুকু পালন করে তারপরে সমাজ সেবা। এই পর্যায়ে কিশোর বয়সের ছেলে মেয়েরা যদি সিগারেট ধরে, তাহলে দোষের কিছু নেই। সে ড্রাইভারকে দেখছে সিগারেট খেতে। বাবাকে দেখছে ড্রিংক করতে। শিশু কিশোররা অনুকরণ প্রিয়। তারা যা দেখে তাই ফলো করে। যে বয়সে তাদের বাবা মায়ের সাথে বন্ধুত্ব থাকা দরকার, সে বয়সে তারা নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করে। এই নিঃসঙ্গতা কাটাতে তারা কি করবে? এই সময়ে তারা যদি সিগারেট ধরে তাহলে দোষটা কার? বাবা মায়ের উচিত ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী ছেলে মেয়েকে বেশি করে সময় দেওয়া।
পরিচিতি : চলচ্চিত্র অভিনেতা ও মুক্তিযোদ্ধা/মতামত গ্রহণ : সানিম আহমেদ/সম্পাদনা : গাজী খায়রুল আলম