আপনি মিথ্যা সাক্ষ্য দিচ্ছেন না তো?
মাওলানা কাসেম শরীফ
৮১. (বড় ভাই বলল) তোমরা তোমাদের পিতার কাছে ফিরে যাও এবং বলো, হে আমাদের পিতা, আপনার পুত্র চুরি করেছে। আমরা যা জানি, তারই প্রত্যক্ষ বিবরণ দিলাম (সাক্ষ্য দিলাম), আর অজানা বিষয়ে আমরা সংরক্ষণকারী নই। (সুরা : ইউসুফ, আয়াত : ৮১ (তৃতীয় পর্ব)
তাফসির : আলোচ্য আয়াতের মূলকথা হলো, বিনিয়ামিন কথিত চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার পর বড় ভাই দেশে ফেরেনি। তার শেখানো পরামর্শ অনুযায়ী ভাইয়েরা পিতা ইয়াকুব (আ.)-এর কাছে গিয়ে বলে, আপনার ছেলে চুরি করেছে। চুরির ঘটনা আমরা নিজেদের চোখে দেখেছি। আমাদের সামনেই তার আসবাবপত্র থেকে চোরাই মাল বের করা হয়েছে। তাই অনেক চেষ্টা করেও তাকে ফেরত আনা সম্ভব হয়নি। এ আয়াতের তাফসির করতে গিয়ে তাফসিরবিদরা ইসলামী শরিয়ত ও আদালত অনুযায়ী সাক্ষ্য ও সাক্ষীর স্বরূপ নিয়ে আলোচনা করেছেন। প্রসঙ্গক্রমে এখানে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার পরিণাম নিয়ে আলোচনা করা হলোÑ
ইসলামের দৃষ্টিতে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া জঘন্যতম গুনাহর কাজ। একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) হেলান দিয়ে বসে ছিলেন। এই অবস্থায় তিনি সাহাবাদের বলেন, কবিরা গুনাহ সম্পর্কে কি আমি তোমাদের বলব? সাহাবারা বলল, হে আল্লাহর রাসুল, বলুন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, অন্যতম কবিরা গুনাহ হলো, কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ স্থির করা (শিরক করা), মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া। এ কথা বলে নবী করিম (সা.) সোজা হয়ে বসেছেন এবং বলেছেন, মিথ্যা সাক্ষী দেওয়া। এ কথা তিনি তিনবার বলেছেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৬৫৪)
মিথ্যা সাক্ষ্য দিলে মুক্তি ও কল্যাণ লাভের সব পথ চিররুদ্ধ করে দেওয়া হয়। এমন ব্যক্তির কোনো কাজ আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য হয় না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও কাজ পরিত্যাগ করতে পারল না, তার রোজা রেখে পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬০৫৭)