প্রধানমন্ত্রীর অর্থ সহায়তায় রাবেয়া-রোকেয়ার অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন চিকিৎসকরা অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি আসছে বিদেশ থেকে হ সার্জন আসছেন হাঙ্গেরি থেকে
রিকু আমির : জোড়া মাথার দুই শিশুকে আলাদা করতে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ সহায়তায় অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন চিকিৎসকরা। এই অস্ত্রোপচারে যে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দরকার তা অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং এগুলো বাংলাদেশে না থাকায় আনা হচ্ছে বিদেশ থেকে। গত বছরের ২০ নভেম্বর থেকে রাবেয়া ও রোকেয়া নামের জোড়া মাথার শিশু ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি। বর্তমানে তাদের বয়স ১৯ মাস।
তাদের চিকিৎসায় গঠিত ১৮ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক অপারেশন সম্পর্কে এ প্রতিবেদককে বলেন, অপারেশনে যেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হবে, সেসবের ১০-১২টি বিদেশ থেকে আনা হচ্ছে। এগুলোর মূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ অর্থ প্রদান করেছেন। এছাড়া পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রী আরও দুই লাখ টাকা দিয়েছেন শিশুদের পরিবারকে, যাতে তারা হাসপাতালে থাকার খরচ নির্বাহ করতে পারেন।
মেডিকেল বোর্ড থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী- অপারেশন করতে হাঙ্গেরি থেকে একজন সুদক্ষ প্লাস্টিক সার্জন আসবেন। বাকি যন্ত্রপাতি তিনি আনবেন। এভাবে কথা হয়েছে।
কবে নাগাদ অপারেশন করা হবে- এটা এখনো ঠিক করেননি চিকিৎসকরা। আগামী সোমবার বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে।
অপারেশনে কী করা হতে পারে জানতে চাইলে বার্ন ইউনিটের একজন সার্জন ও বোর্ডের সদস্য এ প্রতিবেদককে জানান, এখানে শুধু মাথা জোড়া যে তা নয়, তাদের ব্রেনও জোড়া, এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা। তাদের মস্তিষ্কে বাঁধ বসানো হবে, যাতে দুটি ব্রেনই সমানভাবে প্রয়োজনীয় উপাদান দেহ থেকে গ্রহণ করতে পারে। তাদের সাইনাস আলাদা করতে হবে।
তার বক্তব্য অনুযায়ী- এই অপারেশন খুব জটিল এবং ঝুঁকি সম্পন্ন। শিশুদের প্রাণহানিও হতে পারে। এটা বলা হয়েছে তাদের বাবা-মা পাবনার চাটমোহর উপজেলার আটলংকা গ্রামের স্কুল শিক্ষক দম্পতি রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা খাতুনকে। তারা অপারেশনে সম্মত হয়েছেন।
বার্ন ইউনিটের ৬১২ নম্বর কেবিনে আছে শিশুরা। তাদের বাবা-মা জানান, এমনিতে আর কোনো সমস্যা নেই, জোড়া মাথা ছাড়া। তারা আলাদাভাবেই সব কিছু করে। মুখেই স্বাভাবিক খাবার খায়। মাঝে মাঝে তারা বাবা, মা, দাদা বলে ডাকে।
রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা খাতুনের রাফিয়া নামের ৬ বছরের আরেক মেয়ে আছে। পাবনা সদরের একটি হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে রাবেয়া ও রোকেয়ার জন্ম। তাদের বয়স যখন ৫ দিন, তখন থেকেই ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা হয়। বহুবার এখানে চিকিৎসা দেয়া হয়। সম্পাদনা : আনিস রহমান