মোদির টুইট আর রুটি বানিয়ে আলোচনায় ট্রুডো
আনন্দ মোস্তফা: কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর ভারত সফর যতটা না রাজনৈতিক-বাণিজ্যিক কারণে আলোচিত তার থেকে বেশি আলোচিত হয়েছে ভারতের শীতল মনোভাবের কারণে। সপ্তাহব্যাপী ভারত সফরে এসে কয়েকদিন ‘অনাদরে’ থেকেছেন ট্রুডোকে। আর ট্রুডো অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে রুটি বানিয়ে এসেছেন আলোচনায়।
গত ৫ দিনে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাকে সঙ্গ দেননি, এমনকি টুইটপ্রেমী হওয়া সত্ত্বেও টুইটও করেননি। অবশেষে শুক্রবারের দ্বিপক্ষীয় বৈঠককে সামনে রেখে ট্রুডোকে নিয়ে টুইট করলেন মোদী।
টুইটে মোদী বলেন, ‘আশা করি জাস্টিন ট্রুডো ও তার পরিবারের এখানে খুবই ভালো সময় কেটেছে। আমি তার সন্তান জ্যাভিয়ার, ইল্লা গ্রেইস এবং হ্যাড্রিয়েনের সঙ্গে দেখা করার জন্য মুখিয়ে আছি। এখানে একটি ছবি দিলাম যা ২০১৫ সালে আমার কানাডা সফরের সময় তোলা। ওই সময়টায় প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো ও ইল্লা গ্রেইসের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছিল।’
গতকাল শুক্রবারের দ্বিপক্ষীয় বৈঠককালে মোদী ও ট্রুডো দুদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, প্রতিরক্ষার নানা দিক, বেসামরিক পরমাণু সহায়তা, মহাকাশ সহযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তনের দিক মাথায় রেখে উপযুক্ত পরিবেশবান্ধব জ্বালানি উদ্ভাবন ও ব্যবহার এবং শিক্ষার মতো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।
ট্রুডোর প্রতি মোদীর এহেন বিরূপ আচরণের মূল কারণ স্বাধীনতাকামী শিখদের খালিস্তান আন্দোলনের প্রতি ট্রুডো ও তার সরকারের সহানুভূতি ও সমর্থন। ভারত বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখছে। এই বার্তাই কানাডাকে পৌঁছে দিয়েছে ভারত, ট্রুডোকে ‘অনাদরের মেহমান’ বানিয়ে।
এদিকে অন্যান্য সমস্ত দেশের নেতাদের মতো গুরুগম্ভীর নন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। বরং বরাবরই মজার সব কান্ডকারখানা ঘটিয়ে খবরের শিরোনাম হতে ভালোবাসেন।
৭ দিনের ভারত সফরে এসেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। সফরের চতুর্থ দিন স্বপরিবারে ঘুরতে গিয়েছিলেন শিখ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র স্থান অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দিরে। ভারতীয় পোশাক পরে মন্দিরে ঢুকে ধর্মীয় আচারও পালন করেন। এরপর ট্রুডো পরিবার হাজির হন মন্দিরের ভক্তসেবার রান্না ঘরে। সেখানে ভক্তদের জন্য কাজ করার সুযোগ থাকে দর্শনার্থীদের। ট্রুডো পরিবারও বাদ যাননি ভক্তদের সেবা করা থেকে। পুরো পরিবার মিলে ভক্তদের জন্য রুটি বানানোর কাজ শুরু করে দেন।
স্ত্রী সোফি ট্রুডোকে নিয়ে ট্রুডোর রুটি বানানোর বিষয়টি বেশ মনোযোগ দিয়ে প্রত্যক্ষ করেছে দুই সন্তান জেভিয়ার জেমস এবং ইলা গ্রেস মার্গারেট। মূলত ভারতের মন্দিরে মানুষকে সেবা করার এই বিরল অভিজ্ঞতা নিতেই ট্রুডো পরিবার নেমে পড়েছিলেন রুটি তৈরির কাজে। বিষয়টি অনলাইন দুনিয়ায় বেশ সাড়া ফেলেছে। এনডিটিভি