ইন্টারনেটের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে ঝুঁকছে তরুণরা
ইসমাঈল হুসাইন ইমু : দেশে অনেক তরুণ ইন্টারনেটের মাধ্যমে উদ্ধুদ্ধ হয়ে জঙ্গিবাদে ঝুঁকছে। এর মধ্যে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানরাই বেশি। বিভিন্ন সময় র্যাব ও পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া গ্রেফতার হওয়া ৭০০ জঙ্গির উপর জরীপ চালানো এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ইন্টারনেট ভিত্তিক জঙ্গিবাদে উদ্বদ্ধু হয়েছে তাদের ৮২ ভাগ। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গত সোমবার র্যাব-২ এর একটি দল রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে নুরুজ্জামান লাবু ও নাজমুল ইসলাম শাওনকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনলাইনের মাধ্যমে প্রায় ৪০-৫০ জন সমমনা উগ্রবাদীদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে জঙ্গি তৈরী করার কথা স্বীকার করেছে।
সূত্র জানায়, আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানে জঙ্গি সংগঠনগুলোর নেটওয়ার্ক ক্রমশ দূর্বল ও কোনঠাসা হয়ে পড়েছে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জঙ্গিরা পুনরায় একত্রিত হয়ে নেটওয়ার্ক দৃঢ় করার চেষ্টা করছে। এ লক্ষ্যে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সমমনাদের একত্রিত করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এই ধরনের প্রেক্ষাপটে র্যাব তাদের গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-২ এর একটি দল অভিযান পরিচালনা করে গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার সোনালী ব্যাংক মোড় হতে জেএমবি সদস্য (১) মোঃ নুরুজ্জামান লাবু ও নাজমুল ইসলাম শাওনকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ব্যাপারে পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিটের প্রধান মোহম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, জঙ্গিরা এখন আর আগের মত সংগঠিত হতে পারছে না। উচ্চবিত্তের সন্তানরা ইন্টারনেটে জঙ্গিবাদে উদ্ধুদ্ধ হচ্ছে। তারা আল কায়দা, আইএসসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের ম্যাগাজিন বা প্রবন্ধ পড়ে উদ্ধুদ্ধ হচ্ছে তারা। অভিভাবকের নজরদারি না থাকায় সন্তানরা নিভৃতে ঘরে বসেই ঘন্টার পর ঘণ্টা ইন্টারনেটে বসে এসব পর্যালোচনা করছে।
পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্রগুলোর মতে, জঙ্গিবাদের ঝুঁকি বাংলাদেশে এখন অনেকটাই কমে গেছে। পুলিশের সক্ষমতা বেড়েছে। ফলে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিট, এন্টি টেররিজম ইউনিট ও র্যাব ইন্টিলিজেন্স ইউনিট জঙ্গিদের উপর কড়া নজরদারি করছে। ফলে জঙ্গিরা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করলেই ধরা পড়ে যাচ্ছে। অবশ্য সূত্রগুলো এও বলেছে, জঙ্গিরা পুরোপুরি শেষ হয়নি। তারা এখনো ঘাপটি মেরে আছে।