দুদকের চেষ্টাতেই দুর্নীতিতে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে Ñদুদক চেয়ারম্যান
তরিকুল ইসলাম সুমন : ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচকে সামান্য অগ্রগতি দুদকের নেওয়া নানা কর্মকান্ডের ফলে হয়েছে বলে মনে করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
গতকাল ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বলেন, দুর্নীতির সূচক আন্তর্জাতিকভাবে যেটা বের হয়েছে কোনো কোনো দেশে মাত্র এক পয়েন্ট কমেছে। আর দুই পয়েন্ট সম্ভবত ১০-১২টি দেশের। দুই পয়েন্ট কমানো এত সহজ বিষয় নয়। তবে আমি মনে করি আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই।
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, দুর্নীতির নেপথ্যে আমরা সবাই। আপনি যদি প্রতিরোধ করতে না পারেন, আপনিও এর অংশ। দুদকও পারছে না, ব্যাপক জনগণের অংশগ্রহণও হচ্ছে না। অর্থাৎ আমরা সবাই দায়ী এটার জন্য।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি দমনে গণমাধ্যম, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সকল জনসাধারণের সাহায্য দরকার। জনগণকে যদি সচেতন না করা যায়, তাহলে আমার মনে হয় যে গতিতে দুর্নীতি চলছে, সে গতিতে প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না। এটা একটি সমস্যা।
বড় বড় দুর্নীতিবাজ আইনের আওতায় আসছে- টিআইবির এক পর্যবেক্ষণের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি এটার সঙ্গে মোটেই একমত নই যে বড় দুর্নীতিবাজ আর ছোট দুর্নীতিবাজের মধ্যে পার্থক্য নেই। দুর্নীতিবাজ সবসময়ই দুর্নীতিবাজ। বড় ছোট করা সমীচিন নয়। যে কোনো দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। বড় ছোট করে বিভাজন করলে দুর্নীতি কমবে না।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারছি না, সেটা আমি স্বীকার করি না। যদি তাই হয় ৩৭ শতাংশ সাজার হার বেড়ে কীভাবে ৭৪ শতাংশ হলো। হ্যাঁ, একটা কথা সঠিক যে গতিতে বা যতটুকু কাক্ষিত মাত্রায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করা দরকার ছিল সেটুকু পারছি না। তবে এটা বুঝতে হবে এটা সহজ বিষয় নয়। এর জন্য জনসাধারণের অংশগ্রহণ প্রয়োজন।
তিনি বলেন, অর্থ পাচার হচ্ছে, এটা সত্য। তবে এ সমস্যা শুধু বাংলাদেশের নয়, এটা বৈশ্বিক সমস্যা। বিশ্বের সব জায়াগায় অর্থ পাচার হচ্ছে। এ বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধানের আইনের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কারণ মানিলন্ডারিং আইনে দুদক কেবল সরকারি কর্মকর্তাদের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারে। বেসরকারি পর্যায়ে তদন্ত করবে এনবিআর, বাংলাদেশ ব্যাংকের এফআইইউ বা সিআইডি। বাংলাদেশের আইনে অর্থ পাচারের ঘটনায় দুদকের সরাসরি ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার কথাও ইকবাল মাহমুদ বলেন।
ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতির বিষয়ে দুদকের উদাসীনতার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ইকবাল মাহমুদ বলেন, কমিশন কোনো ব্যক্তির সামাজিক বা রাজনৈতিক পরিচয় দেখে না। কমিশন কারো প্রতি অতি উৎসাহী বা অতি উদাসীনতা দেখায় না। মামলা হয় অনুসন্ধানের ভিত্তিতে। এক্ষেত্রে ব্যক্তি পরিচয় কোনো বিষয় নয়। কমিশনের কার্যাক্রমে কোনো রাজনৈতিকে ইস্যুকে বিবেচনা করা হয় না।