ঢাকা থেকে ইয়াবার চালান যায় খুলনা, যশোর
মাইক্রোবাসে আছে বিশেষ প্রকোষ্ঠবিপ্লব বিশ্বাস : রাজধানীর গুলশান, বনানী, মিরপুর, ধানম-ি এলাকায় কমপক্ষে অর্ধশতাধিক বাসা-বাড়িতে চলছে ইয়াবার রমরমা ব্যবসা। এই ব্যবসায়ীদের মধ্যে রয়েছেন রাজনৈতিক নেতা, চিকিৎসক, ঠিকাদার, শিক্ষার্থিসহ অন্যরা। আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর একশ্রেণির অসৎ সদস্যদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তারা এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে র্যাবের কাছে তথ্য রয়েছে।
র্যাব জানায়, নিরাপদ ভেবে অনেকেই এখন বাসা ভাড়া নিয়ে এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। গ্রেপ্তার এড়াতে এই ইয়াবা ব্যবসায়ী এবং ডিলাররা কলেজপড়–য়া ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যবহার করছে। গত সোমবার ভোরে র্যাব-১ এর হাতে বসুন্ধারা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেপ্তারকৃত ইয়াবা ডিলার সিরাজুল ইসলাম রুবেল ও সুমাইয়া সুলতানা রিয়া এ তথ্য জানায়।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম জানান, গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসার আড়ালে ইয়াবা বিক্রি ও সরবরাহ করে আসছিল বসুন্ধরার রুবেল-রিয়া দম্পতি। এজন্য রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকাকে নিরাপদ মনে করে গড়ে তুলেছিল মাদকের ট্রানজিট। কক্সবাজার সীমান্ত থেকে ইয়াবা এনে রাখা হতো বসুন্ধরার ওই বাসায়। এরপর সেখান থেকে রাজধানী ও আশপাশ এলাকায় তা সরবরাহ করা হতো। তিনি বলেন, আসামি রুবেলের সঙ্গে গত দুই বছর আগে রিয়ার বিয়ে হয়। রুবেল এসএসসি এবং রিয়া এইচএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। এ ছাড়া গ্রেফতার মফিজুল ইসলাম মাইক্রোবাস চালক, শাকের ও জসিম মাদক ব্যবসায়ী। তারা যাত্রীবেশে টেকনাফ থেকে মাদক বহনের কাজ করতো। মূলত এই দুই মাদক ব্যবসায়ীর প্রস্তাবেই রুবেল ইয়াবা ব্যবসা শুরু করেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে ইয়াবা ব্যবসায় পরিচালনা করতেই রুবেল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বাসা ভাড়া নেয়। বাসা ভাড়ার ৪০ হাজার টাকা দিতেন দুই মাদক ব্যবসায়ী।
তিনি বলেন, তারা মাদক বহন ও রাজধানীসহ এর আশপাশের এলাকায় সরবরাহের জন্য রেজিস্ট্রেশনবিহীন মাইক্রোবাস ব্যবহার করতো। এই গাড়িতে একেক সময় একেক নম্বর প্লেট ব্যবহার করা হতো। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানায়, টেকনাফ থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট ঢাকায় পৌঁছানোর পর এর একটি অংশ নরসিংদী ও দোহারে সরবরাহের জন্য রুবেলের ফ্লাটে রাখা হতো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি এড়াতে মাইক্রোবাসে তৈরি করা হয় বিশেষ প্রকোষ্ঠ। তাতে টেকনাফ ও কক্সবাজার থেকে লুকিয়ে আনা হয় ইয়াবা। তিনি বলেন, ইতিপূর্বে এই চালান ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি চালান খুলনা, যশোর, বেনাপোল এলাকায় পাঠানো হয়েছে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীর নাম পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।