কোটা না থাকলে কি আমি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে?
আহমাদুল হক তনু
প্রথমেই বলতে চাই, আমাদের দেশে কোটা ব্যবস্থা কেন? এটা রাখার উদ্দেশ্য কি? বাংলাদেশের প্রতিটা চাকরী ক্ষেত্রেই আমরা কোটা প্রথার একটি ব্যবস্থা দেখতে পাই। আমার প্রাণের গভীর থেকে প্রথমেই তাদের জন্য গভীর শ্রদ্ধা জানাই, যারা ১৯৭১ সালে আমাদের দেশের স্বাধীনতার জন্য নিজের মূল্যবান জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। আমরা তাদের শ্রদ্ধা করি, তাদের প্রতি কোন বক্তব্য নেই কিন্তু আমরা দেখি প্রতিটি চাকরি ক্ষেত্রে আমরা তাদের পরবর্তী বংশধরদের জন্য একটি বিশাল অংশ ছেড়ে দিতে হয়। হ্যাঁ, তারা আমাদের দেশের জন্য অনেক কষ্ট করেছেন। কিন্তু তাই বলে কি তাদের জন্য আমাদের ৩০ শতাংশ আসন ছেড়ে দিতে হবে? ৩০ শতাংশ যদি তাদের জন্য রেখে দেয়া হয়, তাহলে আমাদের দেশে মেধার মূল্যায়ন কতটুকু করা হলো? পিএসসি বলছে, যারা কোটা পদ্ধতিতে আমাদের এখানে আসে, তাদের জন্য পাস মার্ক রাখা হয়। কিন্তু অনেকে সেই পাস মার্ক পায় না। তাহলে কী মেধাশূন্যদের দিয়ে কাজ চালিয়ে নিবো?
আমার একটি প্রশ্ন হচ্ছে, যারা আমাদের দেশের ৩০ শতাংশ কোটা নিচ্ছে তারা ১৯৭১ সালে কি যুদ্ধ করেছে? কিন্তু তখন যারা ছিল তারা কি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিল? তাহলে এই বিভাজন কেন? আমাদের দেশের এই বিভাজন আমাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ বানিয়ে দিচ্ছে। যারা কোটা পাচ্ছে তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আর যারা কোটা পাচ্ছে না তারা মুক্তিযদ্ধের বিপক্ষে, কেন? এই পক্ষ বিপক্ষ কি আমাদের কে বিভাজিত করছে না? আমাদেরকে কি এর মাধ্যমে দেশের পক্ষে বিপক্ষের অবস্থানে বসানো হচ্ছে না?
এটা জাতির কাছে আমার একান্ত একটি প্রশ্ন থাকবে। তাই সবার উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আমাদের দেশে কোটা পদ্ধতির অতি শিগগিরই সংস্কার করা প্রয়োজন।
পরিচিতি : ছাত্র, ঢাকা কলেজ/মতামত গ্রহণ: শাখাওয়াত উল্লাহ/সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ