ঘুষখোরকে ধরিয়ে দিলে ব্যবসার ক্ষতি হবে না: দুদক চেয়ারম্যান
তরিকুল ইসলাম সুমন: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, আমরা চাই, যদি কেউ ঘুষ চায় তাহলে আপনারা আমাদের কাছে আসুন। আপনার কাজের কোনো ক্ষতি হবে না, আপনার কাজ ওই দিনই করা হবে এবং ঘুষখোরকেও ধরা হবে।
গতকাল বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিয়ময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ২০১৭ সালে ঘুষসহ হাতেনাতে ২৫ জনকে ধরা হয়েছে।এ বিষয়ে আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে। আপনারা যদি ভয় পান যে, এভাবে যদি ঘুষখোরকে ধরিয়ে দেই, তাহলে আমার কাজ চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে! কিন্তু আমি বলছি, আপনার কাজ চিরদিনের জন্য স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আপনাদের নিশ্চয়তা দিতে চাই, আপনারা স্বচ্ছ মনে ব্যবসা করবেন।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা দুর্নীতিগ্রস্ত এটা আমার মনে হয় না। ব্যাক টু ব্যাক এলসি, ওভার ইন ভয়েস ও আন্ডার ইন ফয়েসের মাধ্যমে যে দুর্নীতি হয় সে বিষয়ে আমাদের উদ্বেগ। আমরা চাই আপনারা স্বচ্ছভাবে ব্যবসা করেন। আমরাও চাই ব্যবসার প্রয়োজনে ঋণ নেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে অনেক সময় ঋণ নেওয়ার সময় ভুয়া কাগজপত্র দেওয়া হয়। তাই আমরা বলতে চাই, যথাযথ কাগজপত্র দিয়ে ঋণ নেবেন। গ্যারান্টির ক্ষেত্রে সেটা যেন সত্যিকারের হয়।
সভায় বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম বলেন, বিনিয়োগের জন্য দুর্নীতিকে মিনিমাইজ করতে হবে। প্রতিযোগিতায় আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। দুর্নীতি সমাজ, অর্থনীতি ও রাজনীতিতে কী ধরনের প্রভাব ফেলে আমরা সবাই জানি। একটি গণতান্ত্রিক দেশে আমরা চাইব সবার জন্য সমান সুযোগ থাকাটা জরুরি। এজন সবার জন্য লেভেল প্লেইং ফ্লিড দরকার। ব্যবসা ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়মনীতি পালন করে যাতে যে কোনো ব্যক্তি সুযোগ নিতে পারে। অন্যকিছু যাতে কেউ বাধাগ্রস্ত করতে না পারে। সেখানে যাতে কোনো ধরনের দুর্নীতি না হয় সেটা আমরা চাই।
এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক হাসিনা নেওয়াজ বলেন, স্পিড মানি নিয়ে অনেক সময় ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিতে বাধ্য হন। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে তারা অনেক সময় এ ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জাড়িয়ে যান। আমাদের দেশের এক ধরনের সংস্কৃতি রয়েছে, দুর্নীতিবাজ ধনী হলেও সমাজ ব্যবস্থায় প্রায় সবাই সখ্যতা গড়ে তুলতে চায়। এ সংস্কৃতির পরিবর্তন দরকার।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যাপারে আমাদের ম্যাসেজ হচ্ছে- আপনারা বাধ্য হয়ে ঘুষ দেবেন না। আপনারা ভয় পাবেন না যে, আপনাদের ক্ষতি হবে। আমাদেরকে জানালে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) পরিচালক সেলিম আক্তার খান, বাংলাদেশ ও মালয়শিয়া চেম্বারের প্রতিনিধি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন এবং মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এমসিসিআই) মহাসচিব ফারুক আহমেদ। সম্পাদনা : শোভন দত্ত