আমাদের নিজেদের মধ্যে মূল্যবোধের বড়ই অভাব
ড. জিনাত হুদা
বাংলাদেশের একজন বিজ্ঞ শিক্ষাবিদ অধ্যাপক জাফর ইকবাল সাহেবের উপর একটি আচমকা হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এটি একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা। তিনি আগে থেকেই মোটামোটি এব্যাপারটা নিয়ে আশংকায় ছিল। কারণ, এধরণের ঘটনা আমাদের দেশে নতুন নয়। যে শক্তি আমাদের দেশে এত তান্ডব করছে, তা আমরা প্রতিনিয়তই দেখছি। আমার তো বুঝে আসে না পুলিশি পাহাড়ায় কেমন করে একটি হামলাকারী তার আশে পাশে আসতে পারে? তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ, সেই হামলাকারী তার ঠিক পিছনেই দাঁড়িয়েছিল। আবার আরেকটি বিষ্ময়কর ব্যাপার হলো, সেটা নাকি ডিপার্টমেন্টের একটি অনুষ্ঠান ছিল। ডিপার্টমেন্টের অনুষ্ঠানে ডিপার্টমেন্টের ছাত্র ছাড়া অন্য কেউ কিভাবে প্রবেশ করে? তাতো আমাদের বুঝে আসে না। আমি তো এধরণের ঘটনা কখনোই দেখিনি। এটি আমার কাছে খুবই অ™ু¢ত বলে মনে হচ্ছে। আমাদের দেশে যারা এধরণের টার্গেটকৃত ব্যক্তি তাদেরও উচিত নিজেদেরকে আরো সচেতন রাখা। পুলিশ প্রশাসনেরও এব্যাপারে তৎপর হওয়া উচিত।
এখন এমনও হতে পারে, আমাদের দেশে কিছুদিন যাবৎ জঙ্গিদের তৎপরতা কমে যাওয়ায় আমাদের মধ্যে এব্যাপারে কিছুটা অসচেতনভাব প্রকাশ পেয়েছে। যার কারণে এধরণের ভয়াবহ ঘটনার সম্মুখীন হতে হলো। আসলে বিষয়টি তা নয়, আমাদের কখনোই এই ব্যাপারটি হালকা করে দেখা ঠিক নয়। তাই সবসময় আমাদের এধরণের হামলার ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে, যেন কেউ আমাদের কাউকে আর হামলা করতে না পারে। আমাদের দেশে এধরনের কাজ যারা করছে, তারা বিভিন্ন গোষ্ঠীর সাথে জড়িত। তাদের সাথে যেমন বিদেশী রাজনীতি জড়িত, তেমনি দেশের রাজনীতিও জড়িত। আমাদের নিজেদের মূল্যবোধেরও অভাব আছে অনেক ক্ষেত্রে । বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এধরণের কাজগুলো আমাদের সমাজের কোমলমতি ছাত্রদের শিখানো হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে আমরা দেশে একটি অস্বস্থিমূলক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আগেতো মনে করা হতো, শুধু মাদ্রাসা মক্তবের ছাত্ররাই এর সাথে জড়িত কিন্তু এখনতো সকল ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা এর সাথে জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। সতুরাং এদের মূল অনেক গভীরে, একদিনে তো আর এদের ধরা যাবে না। তাই সময় নিয়ে তাদের কে ধরার ব্যবস্থা করা দরকার।
পরিচিতি : অধ্যাপক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাবি./ মতামত গ্রহণ : শাখাওয়াত উল্লাহ/ সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ