নাগরিক ঐক্যের সেমিনারে বক্তারা ব্যক্তি কেন্দ্রিক শাসন দুর্নীতির প্রধান কারণ
রুহুল আমিন : ব্যক্তি কেন্দ্রীক শাসন দুর্নীতির প্রধান কারণ বলে উল্লেখ করেছেন শিক্ষক, রাজনীতিক, আইনজীবীসহ সমাজের বিশিষ্টজনরা। তারা বলেছেন, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে যেতে হবে। গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে দুর্নীতি বিষয়ক নাগরিক ঐক্যের সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনূল হোসেন সেমিনারে বলেন, স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরও আজ আমরা ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে পারিনি। তিনি বলেন, সংসদে বিরোধীদল ও সরকারি দল এক হয়ে আমাদের শিক্ষিত লোকদের সাথে তামাশা করছে। সমাজতন্ত্রীরা বলে সমাজতন্ত্রই বড় শক্তি আমরা বলি জনতার শক্তিই বড় শক্তি আর দুর্নীতিবাজরা মনে করছে দুর্নীতি শক্তিই বড় শক্তি।
আরেক সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, যে দেশে প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলতে পারে প্রশ্নফাঁস আগেও হয়েছে তার এমন কথার বলার পর প্রশ্নফাস বন্ধ করা যাবে। হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি মনে করছিলাম ফ্যাসিবাদ দেখবো না নিজেকে সৌভাগ্য মনে করছি যে ফ্যাসিবাদ সরকার একেবারে আমাদের দেশেই হুবহুব দেখছি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংক সেক্টর তো এমন ছিল না। এখন এসে একেবারে লাগামহীন হয়ে পরেছে রাজনৈতিক দৃষ্টিতে দেখলে তো হবে না এটা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তারা বলে পৃথিবীতে এমন ব্যাংক দুর্নীতি আরও হয়েছে। আরে আজব ব্যাপার ওই সব দেশে তো বিচারও হচ্ছে কিন্তু আমাদের দেশে তো বিচার হচ্ছে না। অ্যাকশান নিতে হবে, কোনো অ্যাকশান তো দেখছি না।
তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মোহাম্মদ বলেন, ৩২ ধারা হওয়ার মানে হচ্ছে বর্তমানে আমরা যা খবর পাচ্ছি তা সামনে আমরা আর পাবো না। দুর্নীতিবাজদের বাঁচাতেই ৩২ ধারা করা হয়েছে।
সরকার আর জাফর ইকবালের উপর হামলাকারী একই মতাদর্শ ধারণ করে বলে দাবি অনু মোহাম্মদের। তিনি বলেন, ফয়জুলের যেমন কেন্দ্রীয় মতাদর্শ যে আমরা আমাদের বিরোধী মতাদর্শের লোকেরা সবসময় ঠিক কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। আমি যা বলি তাই ঠিক সরকারও তাই করছে তা করাচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, দুর্নীতি কি আমাদের সমস্যা নাকি দুর্নীতি সমস্যার আলামত। অসীম ক্ষমতা আছে অথচ দুর্নীতি হয় না এমন কোনো সরকার খুঁজে পাবেন না। আমাদের সরকারেরও একই আবস্থা।
সভাপতির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্য করে বলেন, তিনি জাফর ইকবালের উপর হামলাকারীকে বলেন খুন- জখম করে বেহেস্তে যাওয়া যাবে না, কিন্তু আমি বলি প্রধানমন্ত্রী আপনি যে গুম-খুন করেছেন তাতে আপনি কি বেহেস্তে যেতে পারবেন? নাগরিক ঐক্যে সেমিনারে সববক্তাই জাফর ইকবালের উপর হামলার নিন্দা জানান।