খাবার স্যালাইনের আবিষ্কারক ড. রফিকুল ইসলাম আর নেই
আনোয়ার হোসেন : খাবার স্যালাইনের অন্যতম আবিষ্কারক ড. রফিকুল ইসলাম মারা গেছেন। (ইন্নালিল্লাহি,,,,, রাজিউন)। গত সোমবার (৫ মার্চ) রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে ৮২ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ড. রফিকুল ইসলাম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এছাড়াও বয়স সংক্রান্ত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি এক পুত্র, দুই কন্যা এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ১৯৩৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন রফিকুল ইসলাম। ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করে আইসিডিডিআরবিতে যোগ দিয়ে ২০০০ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। ব্রিটেনে ট্রপিক্যাল মেডিসিন ও হাইজিন বিষয়ে তিনি উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন। আইসিডিডিআরবিতে তিনি ওষুধ নিয়ে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা চালালেও তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ওআরএস।
ডায়রিয়ার হাত থেকে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ শিশুর জীবন বাঁচানোর কৃতিত্ব দেওয়া হয় খাবার স্যালাইনকে (ওআরএস)।
সব ওষুধের দোকানেই স্বল্প মূল্যে খাবার স্যালাইন পাওয়া যায়। তবে হাতের কাছে এটি পাওয়া না গেলেও সবাই জানে এক মুঠো চিনি বা গুড় আর তিন আঙ্গুলের এক চিমটি লবণ আধা লিটার বিশুদ্ধ পানিতে মিশিয়ে ডায়রিয়ার প্রাণরক্ষাকারী দ্রবণটি তৈরি করা যায়।
জনস্বাস্থ্যে খাবার স্যালাইনের গুরুত্ব বিবেচনায় ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যান্সেট একে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল।
মুক্তিযুদ্ধের সময় শরণার্থী শিবিরে কলেরা ছড়িয়ে পড়েছিল। তখন এর একমাত্র চিকিৎসা ছিলো শিরায় দেওয়া স্যালাইন (ইন্ট্রাভেনাস)। কিন্তু এ ধরনের স্যালাইনের সরবরাহ কম থাকায় খাবার স্যালাইন দিয়ে অনেকের প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছিল। এরপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা খাবার স্যালাইনকে স্বীকৃতি দেয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ডায়রিয়ার চিকিৎসায় স্যালাইনের ব্যবহার নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়। এ কারণে এটি ‘ঢাকা স্যালাইন’ নামেও পরিচিতি পেয়েছিল।