রাসায়নিক হামলার প্রমাণ পেলে সিরিয়ায় হামলা : ফ্রান্স
শোভন দত্ত : সিরিয়ার পূর্ব ঘৌটায় রাসায়নিক হামলার প্রমাণ পেলে দেশটিতে হস্তক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ফ্রান্স। বৃহস্পতিবার ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন ইভেস লি দ্রিয়ান এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, যাচাই বাছাইয়ে যদি রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়, এতে প্রাণহানি ঘটে থাকে তাহলে এ ধরনের হামলার বিস্তার রোধে হস্তক্ষেপ কররে প্যারিস। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
গত বুধবার প্রকাশিত বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, পূর্ব ঘৌটায় ফসফরাস বোমার মতো কিছু নিক্ষেপ করা হচ্ছে। তবে, সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলছে, বুধবার আসাদ বাহিনীর ছোঁড়া বোমাগুলো ছিল ব্যারেল বোমা। হামলার শিকার লোকজনকে শ্বাস নিতে লড়াই করতে দেখা গেছে। স্থানীয় অ্যাক্টিভিস্টরা বলছেন, হামোরিয়া আবাসিক এলাকায় ওই হামলা চালানো হয়েছে।
রেডক্রসের মুখপাত্র ইঙ্গি সেডকি বলেছেন, ‘ত্রাণ কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি এমনভাবে পাল্টে গেছে যাতে আমাদের পক্ষে কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি।’
গত বুধবার সিরিয়ার সরকারি বাহিনী পূর্ব ঘৌটার বিদ্রোহীমুক্ত এলাকাকে আলাদা করে ফেলে। এতে বিদ্রোহী যোদ্ধাসহ হাজার হাজার সাধারণ মানুষ অপর এলাকাটিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েন।
আসাদ বাহিনী বিদ্রোহীদের দখলে থাকা বেইত সাওয়া এবং মিসরাবা দখলে নিয়েছে। স্থলবাহিনীর পথ পরিষ্কার করতে সরকারি বাহিনীকে সেখানে চরম মাত্রায় বোমা বর্ষণ করতে হয়েছে। ‘সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ বলেছে, বুধবার আসাদ বাহিনীর হামলায় অন্তত ৮৭ জন নিহত হয়েছেন। কমপক্ষে ৬০ জন শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা নিয়েছেন।
‘সিরিয়ান আমেরিকান মেডিক্যাল সোসাইটির’ (স্যামস) একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, তারা তাদের চিকিৎসাকেন্দ্রে অন্তত ২৯ জনকে চিকিৎসা দিয়েছেন। এদের মধ্যে দেখা দেওয়া লক্ষণগুলো ক্লোরিন হামলার শিকার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে দেখা দেয়। ওই চিকিৎসাকেন্দ্রে কারও মৃত্যু না হলেও এটাই স্বভাবিক যে অন্যান্য স্থানে যাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে অনেকে মারা গেছে। স্যামস জানিয়েছে, ‘পূর্ব ঘৌটায় ক্লোরিন হামলায় হওয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, অতিরিক্ত ঘাম ঝরা, কফ আসা, সর্দি ঝরা, নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় বুকে শব্দ হওয়া এবং চোখ লাল যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা গেছে। তাছাড়া এ ধরণের হামলার শিকার ব্যক্তিদের যে মানসিক ক্ষতি হয় তা অপরিসীম।’ সূত্র: আল জাজিরা, গার্ডিয়ান।