১৩ মাসে গণপরিবহনের চেয়ে ব্যক্তিগত যান বৃদ্ধি পাঁচগুণ
রিকু আমির : গত ১৩ মাসে সারাদেশে গণপরিবহনের চেয়ে ব্যক্তিগত যান বেড়েছে প্রায় পাঁচগুণ। নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, গণপরিবহণ বিশৃঙ্খল অবস্থায় আছে। এজন্য মানুষ কষ্ট করে হলেও ব্যক্তিগত পরিবহনের দিকে ঝুঁকছেন। ঢাকায় প্রায় ১৩০টি কোম্পানি বাস পরিচালনা করে। এগুলোকে শৃঙ্খলায় আনা খুবই কষ্টকর। পৃথিবীর কোনো শহরে এতো কোম্পানি বাস পরিচালনায় নেই। নিজের কাজ না হওয়া সত্বেও শহরের খাতিরে প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক উদ্যোগ নিয়েছিলেন, কোম্পানির সংখ্যা কমিয়ে আনতে। কিন্তু সেই উদ্যোগ এখন ঝিমিয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি (বিআরটিএ) বলছে- ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতি ২৪ ঘণ্টায় গড়ে প্রায় ৬৫টি ব্যক্তিগত (প্রাইভেট কার ও জিপ) গাড়ি নিবন্ধিত হয়েছে। অন্যদিকে একই হিসাবে গণপরিবহন (বাস-মিনিবাস) নিবন্ধিত হয়েছে ১৩টি। সবচেয়ে বেশি নিবন্ধন হয়েছে- মোটরসাইকেল। এর সংখ্যা প্রায় দুই লাখ।
বিআরটিএ’র তথ্য মতে- ১৩ মাসে সাড়ে ২৫ হাজারেরও বেশি ব্যক্তিগত গাড়ি (প্রাইভেট কার ও জিপ) এবং গণপরিবহন নিবন্ধিত হয়েছে ৫ হাজারেরও বেশি। গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলার পাশাপাশি ঢাকায় সার্বিকভাবে জনচলাচল ও নারীদের চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে নগর পরিকল্পনাবিদ নজরুল ইসলাম বলেন, এতো বড় ও ব্যস্ত শহর, মানুষের চলাচলও বেড়েছে। সেটা অর্থনৈতিক, সামাজিক বা যে কারণেই হোক। মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থারও পরিবর্তন ঘটেছে। এসবও ব্যক্তিগত পরিবহণ বৃদ্ধির কারণ।
গণপরিবহণের চেয়ে ব্যক্তিগত পরিবহন কিছুটা শৃঙ্খলিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাধ্য হয়েই এসব শৃঙ্খলিত। কেননা, কোনো ব্যক্তিগত পরিবহন মালিক চান না, উশৃঙ্খল চলাফেরা করে পরিবহন ক্ষতিগ্রস্থ করতে। তবে এটা দেখা যায়- কিছু রাস্তায় এসব শৃঙ্খলিত থাকে। সারাদেশে যাত্রীবান্ধব গণপরিবহন গড়ে তুলতে সফল না ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে উল্লেখ করে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, গণপরিবহনগুলোতে যাত্রী সেবার মান কমছে। পরিবহনগুলোয় আসনের চেয়ে তিন-চার গুণ বেশি যাত্রী ওঠানো, যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা, চালক ও হেলপারদের অসদাচরণের কারণে ব্যক্তিগত গাড়ি বাড়ছে।