আওয়ামীলীগের নামে টেন্ডার নিচ্ছে বিএনপি জামায়াত
সুভাষ সিংহ রায়
স্বাস্থ্যখাতে প্রকল্পজট। কাজের অগ্রগতি নেই, ১৬ টি প্রকল্পের অবস্থা নাজুক। টেন্ডার ভাগাভাগি নিয়ে চলছে জটিলতা। ২০১৬ সালে যে প্রকল্প শুরু হয়ে ২০২০ সালে শেষ হওয়ার কথা। ২০১৮ সালে তার কাজই শুরু হয়নি। বাংলাদেশের যে অর্থবছর, আমি এই অর্থবছরের সময় জুন-জুলাই এর পক্ষপাতি নয়। কারণ, আমরা যে বলি গৃষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত ৬ ঋতুর কথা, এখন আর ঋতু ৬ টি নেই। এখন মূলত ঋতু হয়ে গেছে তিন টি, অতি বর্ষা, শীত এবং অতি গ্রীষ্ম। বর্ষাকালে যদি কোন প্রকল্পে হাত দেওয়া হয়, সে প্রকল্প কখনই সঠিক মান সম্পন্ন ভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে না। জুন-জুলাইয়ে যদি কোন প্রকল্পের কাজ শুরু করেন, তাহলে চার মাস লাগে এই প্রকল্পের নানান রকম প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে। এটা গুছিয়ে আনতে আনতে যখন কাজ শুরু হয়, তখনই কিন্তু বর্ষাকাল চলে আসে এবং এটি একটি বড় জটিলতা। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে জাতিসংঘের যে অর্জন টি করেছে, যে তিনটি ধাপ অতিক্রম করতে হয়েছে, বাংলাদেশ সে তিনটি ধাপই অতিক্রম করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের যে এক বছর দেড়ি হল, তার কারণ হচ্ছে জাতিসংঘ কিন্তু অর্থবছর ধরে হিসেব করে জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর। অপরদিকে আমাদের অর্থবছর হচ্ছে জুন-জুলাই। যে কারণে, এটা সামঞ্জস্যতা করতেই একটি বছর অতিরিক্ত সময় লেগেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পর থেকে বাংলাদেশ এগুচ্ছে। এখন অনেক ক্ষেত্রেই ই-টেন্ডার হচ্ছে। বাংলাদেশ যে একদিনেই ভালো হয়ে গেছে এটা কিন্তু নয়।
অনেক জটিলতা এখনো রয়ে গেছে। এবং কোন কোন জটিলতা বহুমাত্রিক রূপ ধারপ করেছে। সরকারি দলের হিসেবে যারা পরিচয় দেয়, তারা কি সকলেই সরকারি দলের আদর্শে বিশ্বাস করে? সকলেই কি সরকারি দলের আসল লোক? অনেক নতুন লোকের আগমন ঘটেছে। এবং ব্যবসা বাণিজ্য এমন একটি বিষয় হয়ে মানুষের কাছে দাঁড়িয়েছে, এখানে নীতি নৈতিকতার কোন বিষয় আর থাকে না। এখানে জাত, মান কোন বিষয় নেই, দল বিদল কোন বিষয় নয়। নানান রকম সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে এখন বাংলাদেশে। ভোগবাদী অর্থনীতির সবচে বাজে বিষয় এখানে। যারা টেন্ডারে কাজ পাচ্ছে, দেখা যাচ্ছে যুবলীগ, আওয়ামীলীগ, স্বেচ্ছা সেবক লীগ এদের নাম দিয়ে টেন্ডারের কাজ পাচ্ছে। এই কাজ টা কিন্তু শুধুমাত্র এদের নামে হচ্ছে, কিন্তু কাজ টা পাচ্ছে মূলত বিএনপি জামায়াতের লোকজন। এই কাজ গুলো তারা বিক্রি করে দিচ্ছে। এর ফলে, কাজ টাকে সর্বনাশ না করে দিয়ে আন্তরিকতার সাথে কাজ করা, মন প্রাণ দিয়ে কাজ করা, এক্ষেত্রে অনেক গাফলতি আমরা বিভিন্ন সময় দেখি। যে কারণে এগুলো হচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিক, এই কনসেপ্ট টা কিন্তু অন্য ধরনের লোক বিশ্বাস করবে না। উদাহরণ স্বরূপ, স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের এত বিশ্বব্যাপি যে সুনাম হয়েছে, মাত ৃমৃত্যু হার কমে আসছে, শিশু মৃত্যু হার কমেছে। এই যে অর্জনগুলো, তাদের মাথায় কিন্তু এই অর্জন গুলো নেই। তারা এখন কাজ করার জন্যে ব্যতিব্যস্ত কিংবা আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে আছে। তাদের মাথায় কিন্তু এগুলো নেই, দেশ নেই, আদর্শ নেই, ভালবাসা নেই স্বাভাবিক কারণে এ ঘটনাটা ঘটছে।
পরিচিতি : কলামিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক/মতামত গ্রহণ : মাহবুবুল ইসলাম/সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ