পাইলটের সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের শেষ কথোপকথন
জাহিদ হাসান : কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত উড়োজাহাজটির পাইলট নিয়ন্ত্রণ কক্ষকে জানিয়েছিলেন কোনো সমস্যা নেই। তবে পাইলট উড়োজাহাজটিকে একটি নির্দিষ্ট দিকে অবতরণ করাতে চাইছিলেন। ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মহাব্যবস্থাপক রাজ কুমার ছেত্রি বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ কথা জানিয়েছে।
রাজ কুমার ছেত্রি বলেন, বিমানবন্দরে নামার অনুমতি পাওয়ার পর উড়োজাহাজটির পাইলট বলেন, তিনি উত্তর দিকে অবতরণ করতে চান। তখন কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে জানতে চাওয়া হয়, কোনো সমস্যা আছে কি না। এর জবাবে পাইলট জানিয়েছিলেন, কোনো সমস্যা নেই। অবতরণের আগে দুবার আকাশে চক্কর দেয় উড়োজাহাজটি। আবার নিয়ন্ত্রণ টাওয়ার থেকে জানতে চাওয়া হয়, সবকিছু কি ঠিক আছে? জবাবে পাইলট জানান, ঠিক আছে। এরপর অবতরণে অসংগতি দেখে নিয়ন্ত্রণ টাওয়ার থেকে পাইলটকে জানিয়ে দেওয়া হয়, উড়োজাহাজটি ঠিকভাবে অবতরণ করছে না। কিন্তু এ কথার কোনো জবাব পাইলটের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। এরপর নিয়ন্ত্রণ টাওয়ার থেকে পাইলটের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। মহাব্যবস্থাপক রাজ কুমার ছেত্রি বলেন, অবতরণের সময় যথাযথ নির্দেশনায় থাকা উচিত ছিল উড়োজাহাজটির। কিন্তু উড়োজাহাজটি কোনো কারণে ওই নির্দেশনায় ছিল না। একপর্যায়ে উড়োজাহাজটি বিমানবন্দরের দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে মাটিতে আছড়ে পড়ে ও সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়।
এদিকে নেপালের ইংরেজি দৈনিক নেপালি টাইমস কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে পাইলটের সর্বশেষ কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড শুনিয়ে বলা হয় কন্ট্রোল রুম থেকে ভুল বার্তা দেয়ার কারণেই ককপিটে দ্বিধায় পড়েন পাইলট। অডিও রেকর্ডের শুরুতে শোনা যায়, কন্ট্রোল রুম থেকে বিমানের পাইলটকে বিমানবন্দরের ডানদিকের দুই নাম্বার রানওয়েতে অবতরণের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। পরে পাইলট বলেন, ঠিক আছে স্যার। নির্দেশনা অনুযায়ী পাইলট বিমানটি বিমানবন্দরের ডানদিকে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান কন্ট্রোল রুমে। কিন্তু ডানদিকে রানওয়ে ফ্রি না থাকায় তিনি আবারো কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময় তাকে ভিন্ন বার্তা দেয়া হয়। এবারে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কি বর্তমান অবস্থানে থাকতে পারবেন?
এ সময় পাইলট দুই নাম্বার রানওয়ে ফ্রি করার জন্য কন্ট্রোল রুমের কাছে অনুরোধ জানান। কিন্তু তাকে আবারো ভিন্ন বার্তা দেয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর পাইলট বলেন, স্যার আমি আবারো অনুরোধ করছি রানওয়ে ফ্রি করুন। এর পরপরই বিমানটি বিকট শব্দ করতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পরই বিমানটি ত্রিভুবণ বিমানবন্দরের পাশের একটি ফুটবল মাঠে আঁছড়ে পড়ে। সম্পাদনা : শোভন দত্ত