গ্রেফতারের পর একজন রাজনৈতিক নেতার সাথে ছিনতাইকারীদের মত আচরণ করা হয় !
শাম্মী আক্তার
৬ মার্চ প্রেসক্লাবের সামনে কর্মসূচি পালনের পর, ফেরার পথে গ্রেফতার হওয়া ছাত্রদল নেতার কারাগারে মৃত্যু হয়। রিমান্ডে অতিরিক্ত নির্যাতনের ফলেই এ ঘটনা ঘটে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী যেভাবে নির্যাতন করছে, এটা কোন শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। শান্তিপুর্ণ কর্মসূচি থেকে নেতাকর্মীকে টেনে হিচরে বিবস্ত্র করে নিয়ে গেল। চোর ছিনতাইকারীকে যেভাবে গ্রেফতার করে, একজন রাজনৈতিক নেতাকেও এখন তার চেয়ে জঘন্য আচরণ করে গ্রেফতার করা হয়। তারা বিরোধী দলকে দাড়াতেই দিতে চাচ্ছে না। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সিভিল ড্রেসে অস্ত্র উচিয়ে হামলা করে, গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে। হাইকোর্টের তো নির্দেশনা আছে, বিনা ওয়ারেন্টে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। কোর্ট ইচ্ছে করলে অনুমতি দিতে পারে। পরিস্কার নির্দেশনা থাকা স্বত্বেও তারা বিভিন্ন সভা-সমাবেশ থেকে নেতাদেরকে গ্রেফতার করছে। গ্রেফতারের পর উনাদের যে ব্যবহার, তা কোন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের ব্যবহার হিসেবে মনে হচ্ছে না। তাদের আচরণ তো দেখা যাচ্ছে একদম হায়েনাদের মত। এগুলোর নিন্দা জানানোর ভাষা আমার নেই, এগুলো খুবই দুঃখজনক। যে চেতনাকে বুকে ধারণ করে গণতন্ত্রের জন্য, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, সেগুলো বর্তমান বাংলাদেশে কখনই বিরাজ করছে না। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে বাংলাদেশের মানুষের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, সেই পদ্ধতিতেই বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের উপরে হামলা করছে, নির্যাতন করছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর রিমান্ডের নামে যে নির্যাতন করা হয়, একটি ছবি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে, ব্যাম্বো থেরাপি যেটাকে বলা হয়, হাত পা বেধে উল্টা করে বেঁধে পেটানো হয়। একটা সুস্থ্য সবল ছেলে যে কিনা শ্লোগান দিচ্ছিল, সমাবেশ থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে, তারা এমন কী করলো যে লাশ হয়ে ফিরলো? যাদের ট্যাক্সের পয়সায় পুলিশ চাকরি করছে, বেতন ভাতা পাচ্ছে সেই সাধারণ জণগনের উপরে তারা হিংস্র হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ছে এবং নির্যাতন করছে। এটা আসলে বন্ধ হওয়া উচিত। আইন শৃঙ্খলা রাক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব হচ্ছে, মানুষের জান মালের নিরাপত্তা দেওয়া। কিন্তু এর থেকেও বেশি গুরুত্ব তারা যে কাজের পেছনে দিচ্ছে তা হলো, বিরোধী দলের উপর নির্যাতন করা। কয়েকজন ডিবি সদস্য কিছুদিন আগে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ধরা খেয়েছে। তারা বিভিন্ন অপরাধ কর্মের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে। এগুলো আসলে সুষ্ঠু মনিটরিং হওয়া উচিত এবং বন্ধ হওয়া উচিত।
পরিচিতি : সাবেক সংসদ সদস্য,বিএনপি/মতামত গ্রহণ : মাহবুবুল ইসলাম/সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ