আজ গাজীপুর যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি
মো. মিলটন খন্দকার, গাজীপুর : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ দুই দিনের সফরে আজ সোমবার গাজীপুর যাচ্ছেন। তিনি ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ স্বাধীনতার প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী বীর ও শহীদদের স্মরণে শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে নাগরিক গণসংবর্ধনা ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
পরদিন ২০ মার্চ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় গাজীপুরে কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে কারা সপ্তাহ ২০১৮-এর উদ্বোধন করবেন। তিনি কারাগার প্রাঙ্গণে আয়োজিত আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করবেন। ওইদিন বিকেল ৩টায় রাষ্ট্রপতি গাজীপুরে অবস্থিত ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
এদিকে রাষ্ট্রপতির আগমন উপলক্ষে গাজীপুর শহরজুড়ে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ জয়দেবপুরে ভাওয়াল রাজবাড়িতে তৎকালীন সেনানিবাসে দ্বিতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্টকে নিরস্ত্র করার উদ্দেশ্যে ব্রিগেড কমান্ডার জাহানজেবের নেতৃত্বে পাঞ্জাব রেজিমেন্টের একদল সৈন্য জয়দেবপুর সেনানিবাসে আগমন করবে এই খবর পেয়ে জয়দেবপুরের সর্বস্তরের জনসাধারণ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।
পরে ছাত্র-শ্রমিক-জনতা পাক হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ কল্পে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তায় বহু সংখ্যক ব্যারিকেড তৈরি করে। দুপুরের দিকে পাক হানাদার বাহিনী চান্দনা চৌরাস্তায় উপস্থিত লোকজনকে অস্ত্রের মুখে ব্যারিকেড সরাতে বাধ্য করে সেনানিবাসে প্রবেশ করলে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা পুনরায় রাস্তায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। ছাত্র-জনতা জয়দেবপুর রেলওয়ে লেভেল ক্রসিংএ মালগাড়ির ওয়াগন ফেলে বন্দুক ও বাঁশের লাঠি নিয়ে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলে।
সেনানিবাস থেকে ফেরার পথে জয়দেবপুর লেভেল ক্রসিং-এ পাক হানাদার বাহিনী উপস্থিত হলেই স্থানীয় সাহসী বীররা প্রতিরোধ গড়ে তুলে। ওই সময় হানাদার বাহিনী গুলি চালালে নিয়ামত, মনু খলিফা শহীদ হন এবং ডা. ইউসুফ আলী সরকার ও সন্তুষসহ অনেকে আহত হন।
জয়দেবপুর থেকে চৌরাস্তা পর্যন্ত রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ব্যারিকেড থাকায় হানাদার বাহিনী হেঁটে চান্দনা চৌরাস্তায় উপস্থিত হলে স্থানীয় ছাত্র-জনতার সশস্ত্র প্রতিরোধের মুখে তারা এলোপাথাড়ি গুলি বর্ষণ করে। এখানে গুলিতে হুরমত আলী শহীদ হন এবং কানু মিয়াসহ অনেকে আহত হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় কানু মিয়া মারা যান।