প্রধান দুদলের মধ্যে শত্রুতা বৃদ্ধি গণতন্ত্রের জন্য ইতিবাচক নয় : পঙ্কজ ভট্টাচার্য
রফিক আহমেদ : বাংলাদেশের ঐক্য ন্যাপের আহবায়ক পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দুই কোটির উর্ধ্বে দুর্নীতির মামলা, দন্ডিত ও কারারুদ্ধ থাকা উপলক্ষে প্রধান দু’দলে পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব-শত্রুতা বৃদ্ধি নির্বাচন ও গণতন্ত্রের জন্য ইতিবাচক নয়। গতকাল সোমবার এ প্রতিবেদকের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, সরকারি দলের নির্বাচনী প্রচারের পাশাপাশি অপরাপর দলের ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের পরিসর সংকোচন উদ্বেগজনকও বটে। সাম্প্রতিককালে পত্রিকায় প্রকাশিত দুটি ছবি পরিস্থিতির পরিমাপক। একটি ছবিতে পুলিশ বিএনপি নেতার কণ্ঠনালী চেপে ধরেছে। গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধের লক্ষণ আক্রান্ত। দ্বিতীয় ছবিতে সরকারি দলের সম্মেলন ভ-ুলকারীদের তা-ব থামাতে মন্ত্রীর হাতজোড় করার অসহায় চিত্রটি আইনের শাসনের দুর্বল দশার পরিমাপক।
ঐক্য ন্যাপের আহবায়ক বলেন, ক্ষমতার সাংবিধানিক মালিক জনগণকে কার্যকর মালিকে পরিণত করতে নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে বদ্ধপরিকর হতে হবে। অন্যথায় জাতি নিক্ষিপ্ত হবে ‘গণহীন গণতন্ত্রে বা কর্তৃত্বপরায়ন দলতন্ত্র’-এর নিগড়ে। আর তাতে লাভবান হবে স্বাধীনতা বিরোধী দেশ ও সংবিধান বিরোধী অগণতান্ত্রিক অপশক্তিরা।
তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে গর্বিত আসন অর্জন, প্রায় এক দশকের স্থিতিশীল অর্থনীতি, প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন যেমন সত্য, তেনমই অসত্য নয় ধনী-দরিদ্রের প্রকট বৈষম্য। যা জীবন যাত্রার মানের ক্ষেত্রে সৃষ্টি করেছে অশোভন বৈষম্য। এছাড়া ব্যাংক ডাকাত নামধারী ঋণ খেলাপীদের সোয়া লাখ কোটি টাকা খেলাপী ঋণের মধ্যে ৪৫ হাজার কোটি টাকা অবলোপন করাটা সম্পূর্ন অনৈতিক। ব্যাংক অনিয়মের ১০ হাজার কোটি টাকা যা আত্মসাৎ করেছে ঋণ লুটেরারা। তা জনগণের করের টাকায় পরিশোধ করা সংবিধান ও আইন বিরুদ্ধ।
তিনি আরো বলেন, লাগাতার প্রশ্নপত্র ফাঁসের কেলেঙ্কারীর মধ্যে ফুটে উঠেছে শিক্ষা সংকট। যেখানে পরীক্ষা ও ফলাফলের নির্ভরতার সঙ্গে দু’টি অপ্রয়োজনীয় পাবলিক পরীক্ষা থেকে শিক্ষাকে মুক্ত করে শ্রেণিকক্ষ নির্ভর করে তুলে ‘শক্ষা বাঁচাও’ জাতীয় নীতি গ্রহণ করতে হবে।
ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের উপর অব্যাহত উচ্ছেদ-অত্যাচার বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে স্থায়ী করে তুলছে। নাসিরনগর, গোবিন্দগঞ্জ, গঙ্গাচড়া, লংগদুর ঘটনায় শাস্তি পায়নি দুষ্কৃতিকারীরা। পুনর্বাসিত হয়নি আক্রান্ত- ক্ষতিগ্রস্তরা। অংশগ্রহণমুলক-নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রকৃত রেফারী হতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। সরকার হবে তার সহযোগী। নির্বাচনের পূর্বে জাতীয় সংসদ বাতিল অপরিহার্য।