উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পর নীতি প্রণয়নে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে
জাফর আহমদ : দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেছেন, স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে আমরা রপ্তানির ক্ষেত্রে কিছু সুযোগ সুবিধা ভোগ করছি, কিছু বাজার সুবিধা পাচ্ছি। উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পর এসব সুযোগ হারাতে হবে। সে ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি করতে হবে। শিল্পায়নের দিকে আরও বেশি বেশি যেতে হবে। এবং নীতি প্রণয়নে বেসরকারি খাতকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। যাতে এ সব চ্যালেঞ্জ ঐক্যবদ্ধভাবে ও সমন্বিতভাবে মোকবিলা করতে পারি। গতকাল আমাদের অর্থনীতিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, আন্তর্জাতিক অর্র্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে আমরা এখন কনডিশনাল রেটে ঋণ পাই উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার কারণে এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবো। দেশজ শিল্প রক্ষার জন্য বাইরের পণ্যের ওপর কখনো বাড়তি শুল্ক বসায়। এর মাধ্যমে দেশজ শিল্প উৎসাহিত হয় এবং আমদানি নিরুৎসাহিত হয়। এতে দেশে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দেশি শিল্পের বিকাশের সুযোগ তৈরি হয়। উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পর এগুলো হারাতে হবে, অনেক চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে। কিন্তু যদি আমরা সকলে মিলে কাজ করি তাহলে এ সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারি; আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ ও সম্মিলিতভাবে যদি কাজ করি এগুলো মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
প্রধানমন্ত্রী ভিশন সেট করেছিলেনÑসেই ধারাতে আমরা নি¤œ-মধ্য আয়ের দেশ হয়েছে, বিশ্বব্যাংক আমাদের সেই স্বীকৃতি দিয়েছে উল্লেখ করেন এফবিসিআইয়ের সভাপতি। তিনি বলেন, এমডিজি সাফল্যের সাথে অর্জন করেছি। এখন আমরা এসডিজির পথে আছি, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পথে আছি। এতে আমরা জাতি হিসেবে গর্বিত। এগুলো আমাদের যেমন কিছু সুযোগ আছে এবং কিছু চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছি-সেগুলো থেকে অতিক্রম করতে হবে।
তিনি বলেন, গর্বিত বাঙালির জাতি হিসেবে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি আমাদের বড় পাওয়া। এগুলো টেকসই করার জন্য ট্রেনিং ও শিল্পায়নে নীতি তৈরিতে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু করার জন্য নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে শিল্পায়নে অনুকূল পরিবেশে সৃষ্টির ক্ষেত্রে আর বেশি মনোযোগী হওয়া, নীতি প্রণয়নে বেসরকারি খাততে সম্পৃক্ত করা, তাদের মতামত নেওয়া ও কার্যকর করতে ভূমিকা রাখতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।
উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পর সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার করতে পরামর্শ দিয়ে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ে সংগঠনের এই শীর্ষ নেতা বলেন, ব্যবসা বাণিজ্যের সুযোগ ধরে রাখতে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক জোটগুলোর সাথে আলোচনা করতে হবে। সে ক্ষেত্রে বাজার সুবিধা তৈরি করা এবং নতুন নতুন পণ্য তৈরি করার দিকে মনোনিবেশ করতে হবে; পণ্যের পাশাপাশি বাজার বহুমুখীর দিকে নজর দিতে হবে; পণ্যের মান বৃদ্ধি করতে হবে। এ জন্য নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধি হবে। এ ক্ষেত্রে যে সব নীতির প্রয়োজন হবে সেগুলো তৈরি করতে হবে। সেই লক্ষ্যে সরকারি খাত ও বেসরকারি খাত মিলে এক সাথে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি দেখতে হবে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পর যেন আমরা স্থির না থাকি, উন্নত দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারিÑসেদিকেও নজর রাখতে হবে। সম্পাদনা : আনিস রহমান