অং সান সুচি আসলেই অসহায় মানুষ!
মিয়ানমার নেত্রী ও শান্তিতে নোবেল জয়ী নেত্রী অং সান সুচি আসলে অসহায়। নিজ দেশের ব্যাপারে কেনো সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা তার নেই। গতকাল আশিয়ান নেতাদের কাছে মানবিক সহযোগিতা প্রার্থণা করার পর এমনটিই মনে হচ্ছে।
গত অগাস্ট থেকে দলে দলে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়। মিয়ানমার সেনাবাহিনী নির্বিচারে রোহিঙ্গাদের হত্যা লুণ্ঠন, ধর্ষণ চালিয়েছে। তাদের অত্যচার থেকে বাঁচতে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা বিভিন্ন ধাপে নিজ দেশ ছেড়ে নদী সাঁতরে নিকট প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এরই মধ্যে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক সংস্থা ও অনেক প্রভাবশালী দেশের অনুরোধ হুমকি কিছুই গা করেনি মিয়ানমার সেনা। তারা নির্বিচারে জাতিগত নিধন চালিয়ে গিয়েছে এবং তা অস্বীকার করে আসছে।
অং সান সুচির বিভিন্ন দেশ ও প্রতিষ্ঠানের পাওয়া খেতাব পুরস্কার তুলে নেয়া হয়েছে তার নির্বিকার ভূমিকার কারণে। নোবেল প্রতিষ্ঠানও তার শান্তিতে নোবেল পরস্কার তুলে নিতে চেয়েছিলো। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ান কয়েকজন আইনজীবি অং সান সুচির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা করেছেন। তবে এসবের কোনোটাই মিয়ানমার নেতার মনোভাব বা আচরনে পরিবর্তন আনতে পারেনি।
তবে এবার মিয়ানমার নেত্রী রোহিঙ্গাদের সমস্যা নিয়ে অষ্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত অষ্ট্রেলিয়ান আশিয়ান সামিটে মিয়ানমারের সঙ্কট থেকে উত্তরনে সহযোগিতা চেয়েছেন, যার কারণ আসলে তারা নিজেরাই। আর এর মাধ্যমে তিনি রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের বিষয়টি পরোক্ষভাবে হলেও স্বীকার করলেন।
অবিসংবাদিত আখ্যা পাওয়া এই নেত্রী প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কাছে গৃহবন্দী থেকেও নিজের অবস্থান থেকে নড়েননি। এমন কি নিজের স্বামীর মৃত্যুর পরও তার শেষকৃত্য করতে লন্ডনে যাননি তিনি। সেই নেত্রীর এমন অসহায়ত্ব দেখে করুণা হওয়া ছাড়া আর কিইবা হতে পারে। এখন তিনি গৃহবন্দী হয়তো নন কিন্তু স্পষ্টতই সেনাবাহিনীর ক্রীড়নক ও আত্মাবন্দী অসহায় মানুষ।
লেখক : ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, দৈনিক আমাদের অর্থনীতি