দেশের সকল আন্দোলন-সংগ্রামে শিল্পীরা অবদান রেখেছেন : প্রধানমন্ত্রী
আবুল বাশার নূরু : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শাহাবুদ্দিনের চিত্রে মূর্তমান হয়ে উঠে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ আর বঙ্গবন্ধু। আর সেই টানেই তার প্রদর্শনীর উদ্বোধন করতে ছুটে এসেছি। গতকাল বিকেল রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে শাহাবুদ্দিন আহমেদের ‘শান্তি’ প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদের চিত্রকর্ম সম্পর্কে তিনি বলেন, শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ তিনি মুক্তিযুদ্ধকে গর্ব আর বঙ্গবন্ধু আর্দশ মেনে চিত্রকলার চর্চার করে চলেছেন। তিনি নিজের ‘ছোট ভাই’ সম্বোধন করে শিল্পী শাহাবুদ্দিনের দীর্ঘজীবন কামনা করে শেখ হাসিনা বলেছেন, রংতুলিতে সে যেন মুক্তিযুদ্ধের গৌরবের গাঁথা যেন গেয়ে চলেন। সে সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, বাংলাদেশের সকল অর্জন-আন্দোলন-সংগ্রামে সকল স্তুরের শিল্পীরা অবদান রেখেছেন। মার্শাল ল’র সময় যখন রাজনীতিবিদরা কথা বলতে পারছিলেন না; তখন শিল্পীরা তাদের নাটক, সঙ্গীত ও চিত্রকলায় কথা বলেছেন।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার দুই নম্বর গ্যালারিতে শাহাবুদ্দিন আহমেদের ‘শান্তি’ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। যার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছিল একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে। শিল্পকলা একাডেমি ও ভারতের কলকাতার গ্যাঞ্জেস আর্ট গ্যালারি যৌথভাবে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে শাহাবুদ্দিন আহমেদের লেখা ‘আমার মুক্তিযুদ্ধ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাকে আমি ছোট থেকেই চিনি, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে জানতাম। আমরা থাকতাম পাশাপাশি। আমরা ধানম-িতে আর ও কলাবাগানে। তার বহু চিত্রকর্ম আমার দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। সে বাংলাদেশের জন্য বিশাল সম্পদ। সবচেয়ে বড় কথা সে একজন মুক্তিযোদ্ধা। তার এই পরিচয় তুলির আঁচড়ে সে নিয়মিত প্রকাশ করে চলেছেন।
শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ‘আপা’ সম্বোধন করে বলেন, আপা জানতে চেয়েছিলেন, ফিগারেটিভ ও অ্যাবস্ট্রাক চিত্রকর্মের পার্থক্য কি? তার জবাবে আমি বলছি, আমি ছাড়া মঞ্চে কেউই শিল্পী নন, এটাই অ্যাবস্ট্রাক।
তিনি আরও বলেন, আমার জীবনের ৩টি দিক আছে। ছবি আঁকা, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে প্যারিসে যাওয়ার আগে দেশে দুর্ভিক্ষ চলছিলো। সে সময় আমি ২৭ হাজার টাকা সংগ্রহ করে তার তহবিলে দেওয়ার জন্য চেক দিতে গিয়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন, এ টাকা তোর বাবারে দে। আমি তাকে জোর করে চেকটা দেই। সে সময় তার চোখ দিয়ে পানি বেড়িয়েছিল। সেটাই ছিল তার সঙ্গে আমার শেষ সাক্ষাত। তিনি শুধু রাজনীতিবিদ নন। কারণ রাজনীতিবিদরা কাঁদতে পারেন না। তিনি ছিলেন অনেক বড় একজন মানুষ।