মার খাওয়ার স্তর ক্রমান্নয়ে সম্প্রসারিত হচ্ছে
আফসান চৌধুরী
আমাদের দেশে একজন সাংবাদিককে পিটানো হয়েছে। এমন কোন বড় ঘটনা ঘটেছে বলে এখন মনে করাটা কেমন যেন মনে হচ্ছে। কারণ, আমাদের দেশে এখন সাংবাদিকদের পিটানো হচ্ছে, সাধারণ মানুষকে পিটানো হচ্ছে। যখন যাকে দরকার, তখন তাকে আটক করে পিটানো হচ্ছে। তাই আমার মনে হয়, সাংবাদিককে আলাদা করে পিটানো যাবে না, এটি কি কোথাও লেখা আছে। সাংবাদিক আমাদের সমাজের একটি ভাল অবস্থানে আছে। তাদের কথা আমরা বিভিন্ন ভাবে জানতে পারি। কিন্তু সাধারণ মানুষ তো আরো বেশি মার খাচ্ছে। আজ যদি আমাকে ধরে পিটায়, আমি কি কারো কাছে বিচার চাইতে পারবো? পারবো না। তাই সাংবাদিককে এখন আলাদা করে না বলে, বলতে হবে, আমাদের পুলিশের পিটানোর স্তরটি কতটা উপরে উঠছে। এখন যদি সাংবাদিকদের পিটানো যায়, তাহলে আগামী দিনে সাংবাদিকের উপরে যারা আছে তারা মার খাবে। সেটা সংবাদপত্রের সম্পাদকই বা যে-ই হোক না কেন? কারণ এখন তো সাধারণ মানুষ পিটানো তাদের শেষ হয়েছে। তাই এখন সাংবাদিক পিটাচ্ছে। তাই এখন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, কবে এবং কিভাবে সাংবাদিকদের উপরে যারা আছেন, তাদের পিটিয়ে সংবাদপত্রের প্রধান সংবাদে আসা যায়। কারণ, এখন সাধারণ মানুষ পিটালে আর সংবাদ হয় না। তাই সাংবাদিক পিটিয়ে সংবাদ করছে। কয়েকদিন পর আর কোন সাংবাদিক পিটালে সংবাদ হবে না। তখন তারা সম্পাদক পিটিয়ে সংবাদ বানাবে। যখন তাতেও সংবাদ হবে না, তখন তাদের উপরে যদি কেউ থাকে, তাহলে তারা মার খাবে, এভাবেই চলবে। হ্যাঁ আমাদের সমাজে কিছু লোক আছে, যাদের কেউ মারে না। তারা ছাড়া সবাই এখন মার খাওয়ার যোগ্য বলে ধরে নিতে হবে। তাই আমাদের এখন সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বলতে হবে, মার খাওয়ার স্তর দিন দিন ক্রমান্নয়ে সম্প্রসারিত হচ্ছে। তাই এখন যেকোন লোককে সমাজে পিটাতে পারে পুলিশ। এটিকে পিটানোর ক্ষেত্রে একটি সামাজিক রূপরেখা বলা যেতে পারে।
পরিচিতি : সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট/ মতামত গ্রহণ : শাখাওয়াত উল্লাহ/ সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ