ফয়জুল জঙ্গিবাদে জড়িত জানত পরিবার
আশরাফ চৌধুরী রাজু, সিলেট : শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের উপর হামলাকারী ফয়জুর রহমান ওরফে ফয়জুল জঙ্গিবাদে জড়িত- তা আগে থেকেই জানতো তার পরিবারের সদস্যরা। এমনকি তাকে সমর্থন যুগিয়েছিলেন তার বড় ভাই এনামুল হাসান।
গতকাল মঙ্গলবার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আদালতে এসব তথ্য জানায় হামলাকারী ফয়জুলের বড় ভাই এনামুল হাসান। গতকাল বিকাল সোয়া ৪ টায় জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাকে কারাগারে প্রেরণের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন মেট্টোপলিটন ম্যাজেস্ট্রেট ৩য় আদালতের বিচারক হরিদাস কুমার। প্রায় ৩ ঘণ্টা আদালতে জবানবন্দি দেন এনামুল।
তার জবানবন্দির বরাত দিয়ে সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) অমূল্য কুমার চৌধুরী বলেন, ফয়জুল বিপথগামী হয়ে জঙ্গিবাদে জড়িত হওয়ার বিষয়টি আগে থেকেই জানতো এনামুল ও তার মা-বাবাও। এসব বিষয় তারা গোপন রেখেছেন।
গত ৩ মার্চ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলার ঘটনার পর এনামুল তার বাবা-মাকে নিয়ে পালিয়ে যান-এমনটি জানান আদালতকে। যাওয়ার সময় তিনি কম্পিউটারের সিপিইউ, মেমোরি কার্ডসহ যাবতীয় ডকুমেন্ট নিয়ে পালান, যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো তথ্য প্রমাণ না পায়।
আদালতে এনামুলের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা আরো বলেন- তার ভাই ‘আহলে হাদিস’ নামে একটি ইসলামি সংগঠনের মাযহাবে দীক্ষিত হয় নামাজ পড়তো। এ নিয়ে এলাকার মসজিদের লোকজন বাধা দিলেও সে উল্টো তাদের এই তরিকা সম্পর্কে লোকজনকে বুঝানোর চেষ্টা করতো। তার সঙ্গীয়রাও তার সঙ্গে বাড়ির লোক ও অন্যদের বুঝাতো। তার বন্ধু সোহাগও তার সঙ্গে মানুষকে এই পথে আসার জন্য দাওয়াত করতো।
ফয়জুলের এসব উদ্ভট আচরণ তার পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে অবহিত করেননি উল্লেখ এসি অমূল্য কুমার চৌধুরী বলেন, এক সময় পরিবারের সদস্যরাও ফয়জুলের ধর্মকর্ম মানা অনুসরণ করেন। এক্ষেত্রে এনামুলও বিপথগামী হয়ে অনলাইন থেকে ওয়াজ মাহফিল মেমোরি কার্ডে সংগ্রহ করে দিতো বলে আদালতকে জানায়।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এনামুল হাসানকে ৮ দিনের রিমা- শেষে চিফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজ্জামান হিরো’র আদালতে হাজির করা হয়। সেখান থেকে বেলা সোয়া ১টার দিকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য তাকে মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেটের জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান