স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন আসাদুজ্জামান নূর ও শাইখ সিরাজ
হুমায়ূন কবির থোকন : জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে আরও দুজনকে এবার স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিডিনিউজ
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম গতকাল মঙ্গলবার বলেন, সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এবং কৃষি সাংবাদিকতায় চ্যানেল আইয়ের পরিচালক (বার্তা) শাইখ সিরাজকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে।
এর আগে চলতি বছরের স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য সাবেক স্পিকার প্রয়াত হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী ও শহীদ সার্জেন্ট জহরুল হকসহ ১৬ জনের নাম ঘোষণা করেছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান নূর বাংলাদেশে একজন অভিনেতা ও সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবেই বেশি পরিচিত। আশি ও নব্বইয়ের দশকে বহু টেলিভিশন ও মঞ্চনাটকে তার অভিনয় দর্শকপ্রিয় হয়।
চ্যানেল আইয়ের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ দীর্ঘদিন ধরে টিভির জন্য কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠান তৈরি ও উপস্থাপনা করে আসছেন। নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে তার ‘মাটি ও মানুষ’ অনুষ্ঠানটি ব্যাপক আগ্রহের জন্ম দেয়। কৃষি সাংবাদিকতায় অবস্থানের জন্য ১৯৯৫ সালে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে সরকার।
চলতি বছর রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য যাদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে, তাদের মধ্যে দশজনই মরণোত্তর এ পুরস্কার পাচ্ছেন।
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য এ সম্মাননা পাচ্ছেন সাবেক স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী, যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় দিল্লিতে বাংলাদেশ মিশনের প্রধান ছিলেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী এম এম এ রাশীদুল হাসান, বঙ্গবন্ধুর সহচর সাবেক সাংসদ শংকর গোবিন্দ চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সাবেক সাংসদ এম আব্দুর রহিম, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামি ভূপতি ভূষণ চৌধুরীও (মানিক চৌধুরী) মরণোত্তর এ পুরস্কার পাচ্ছেন।
একই ক্যাটাগরিতে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন শহীদ লেফটেন্যান্ট মো. আনোয়ারুল আজিম, শহীদ আমানুল্লাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, শহীদ মতিউর রহমান মল্লিক, শহীদ সার্জেন্ট জহরুল হক ও কাজী জাকির হাসান।
সাবেক বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল সুলতান মাহমুদ বীর উত্তম ও সাবেক কূটনীতিক আমজাদুল হকও স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য এ পুরস্কার পাচ্ছেন।
এছাড়া চিকিৎসাবিদ্যায় অধ্যাপক ডা. এ কে এমডি আহসান আলী, সমাজসেবায় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান, সাহিত্যে সেলিনা হোসেন এবং খাদ্য নিরাপত্তায় ড. মো. আব্দুল মজিদ এবার স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৫ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পুরস্কার দেবেন।
২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে। স্বাধীনতা পদকের ক্ষেত্রে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ১৮ ক্যারেট মানের পঞ্চাশ গ্রাম স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা, ৩ লাখ টাকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।