আইনের দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় বিলম্বিত হবে খালেদা জিয়ার মুক্তি
এস এম নূর মোহাম্মদ : মামলার জালে আটকে দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি বিলম্বিত হবে বলে মনে করছেন আইনজ্ঞরা। এমনকী এই দীর্ঘ প্রক্রিয়া পাড়ি দিয়ে নির্বাচনের আগে তিনি মুক্তি পাবেন কি না এই নিয়েও চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এমনকী আন্দোলনের মাঠেও বেশ বেকায়দায় পড়েছে দলটি। বিএনপির অভিযোগÑ সরকার তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিও পালন করতে দিচ্ছে না।
এরইমধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া চার মাসের জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। সেইসঙ্গে আগামী ৮ মে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। অপরদিকে জামিন প্রদান করা হাইকোর্ট বেঞ্চ ৪ মাসের মধ্যে এ মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আর হাইকোর্টে আপিল নিষ্পত্তি হতে লেগে যেতে পারে কয়েক মাস। হাইকোর্টে আপিল নিষ্পত্তি হয়ে সাজা বহাল থাকলে এরপর আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে। আবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা বাড়াতে দুদক শিগগিরই হাইকোর্টে আবেদন করতে যাচ্ছে। তাই এ মামলাতেই দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া পাড়ি দিতে হবে খালেদা জিয়াকে। অন্যদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে আগামী ২৮ মার্চ আদালতে হাজির করতে হাজিরা পরোয়ানা (প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট) ইস্যু করেছেন আদালত। এ মামলার কার্যক্রমও শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বলেন, কুমিল্লায় বাসে অগ্নিসংযোগে ৮ জন নিহতের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে হাজির করতে পরোয়ানা জারি করেছেন সেখানকার আদালত। কুমিল্লা, ঢাকা ও নড়াইলের ৪ মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে। যদিও সেগুলো জামিনযোগ্য মামলা। আমরা এখনো ওকালতনামা দিতে পারিনি। সেগুলোয় আশা করি জামিন হবে। আর সেখানে না হলে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
আইনজ্ঞরা মনে করছেন, পরোয়ানা থাকা সব মামলায় সরকার একের পর এক খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার দেখাতে পারে। আর এতে সব মামলায়ই সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন চাইতে হবে তাকে। তবে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন আবেদন নাকচ হলে জামিনের জন্য আসতে হবে হাইকোর্টে। এর পর হাইকোর্ট জামিন দিলেও প্রয়োজন হতে পারে আপিল বিভাগে যাওয়ার। সেক্ষেত্রে তার কারামুক্তি বেশ বিলম্ব হবে। নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়ার কারামুক্তির বিষয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে বলেও মনে করেন অনেকে।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া মুক্তি পাওয়া সম্ভব না। পরোয়ানা থাকা ৫টি মামলায় একের পর এক গ্রেফতার, শ্যোন অ্যারেস্ট দেখাবে। এরপর দীর্ঘ সময় জামিনের প্রক্রিয়া চলবে। এভাবে চালাবে।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সরাসরি কোনো উত্তর না দিয়ে বলেন, আমি তো জ্যোতিষ নই। তাই মুক্তির বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চেšধুরী