খালেদা জিয়ার মুক্তি ইস্যু জুন পরবর্তী আন্দোলনের গতি বাড়াবে বিএনপি সঙ্গে চলবে আইনী লড়াই
শাহানুজ্জামান টিটু : খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে চলমান আন্দোলন আগামী জুন মাসের পর আরও বাড়বে বিএনপি। জাতীয় নির্বাচনের আগে পর্যায়ক্রমে এই আন্দোলন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে পরিণত করার লক্ষ্যে আন্দোলনের বর্তমান ধারায় কিছু পরিবর্তন আনা হবে। এদিকে খালেদা জিয়ার জামিন না পাওয়ায় দলটির মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। এখান থেকে বের হতে তার মুক্তির জন্য রাজপথের আন্দোলনের পাশাপাশি আইনী লড়াই চালিয়ে যাবে তারা। এরই ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার আগে দলের নেতাকর্মীরা ভেবেছিলেন তিনি পরের সপ্তাহেই জামিনে মুক্ত হতে পারবেন। কিন্তু তা হয়নি বরং দলটির নেতাদের অভিযোগ খালেদা জিয়ার মুক্তি এখন সরকারের ইচ্ছা অনিইচ্ছার ওপর নির্ভর করছে। এর বাইরে দলটির নীতিনির্ধারকরা দলের মধ্যে অখ-তা ধরে রাখার ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। যাতে কেউ দলের সঙ্গে বেঈমানি করে কিংবা বিশ্বাসঘাতকতা করে দলকে নতুন করে সংকটের মধ্যে ফেলতে না পারে।
দলের এক সিনিয়র নেতা বলেন, বিএনপি এক গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার। ম্যাডামকে বন্দী রেখে দল ভাঙার ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে সরকার। কিন্তু সেখানে সফল হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ বিএনপিতে এক এগারোর মতো একটা শিক্ষা রয়েছে। তবে দলটির সাধারণ নেতাকর্মীরা মনে করেন, তাদের নেত্রীর মুক্তির দাবিতে যে আন্দোলন চলছে তাতে জনগণের কাছে বিএনপির জনপ্রিয়তা হয়ত বাড়ছে। কিন্তু এই ধরনের আন্দোলন দিয়ে নেত্রীকে মুক্ত করা সম্ভব হবে না। বিকল্প আন্দোলন চায় তারা।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে সরকার ছিনিমিনি খেলছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এই ধরনের মামলায় জামিন হচ্ছে অহরহ। অথচ তাকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে বন্দি করে রাখা হয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। কিন্তু সেখানেও বাধা। আমরা রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করতে চাই কিন্তু দুই দফায় আমাদের অনুমতি দেওয়া হলো না। সেখানে সরকারি দলসহ অন্য দলগুলো সমাবেশ করার সুযোগ পাচ্ছে কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে যত বাধা। তিনি বলেন, আমরা নেত্রীর মুক্তির জন্য যা যা করা দরকার তাই করছি এবং করবো। এছাড়া কারাগারে ম্যাডামের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি আমাদেরকে শক্ত ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলেছেন। তারা মনোবল অটুটু রয়েছে। আন্দোলনও চলবে, আইনী প্রক্রিয়াও অব্যাহত থাকবে।
দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা ম্যাডামের নিদের্শনা মেনে তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ি আন্দোলন করে যাচ্ছি। জনগণ বিএনপির আন্দোলনকে সাধুবাদ জানাচ্ছে। এখানেই সরকারের আরো ভয়ের কারণ হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে আন্দোলনের গতি পথ পরিবর্তন হয়। এটাতো বলে কয়ে হয় না।
খালেদা জিয়া কারাগারে তার মুক্তির দাবিতে গত এক মাসে বিভিন্নভাবে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছে দলটি। তবে বিএনপির কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ হলেও ঢাকাসহ দেশের কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার পাশাপাশি মারমুখী ছিল পুলিশ। চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে ঘোষিত পাঁচ দিনের প্রথম কর্মসূচি পুলিশি বাধায় প- হয়েছে। ঢাকায় সমাবেশ করার জন্য তিন দফা স্থান বরাদ্দ চেয়েও অনুমতি পায়নি দলটি। ঢাকার বাইরেও সমাবেশের অনুমতি না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন দলটির নেতারা। সম্পাদনা: তরিকুল ইসলাম সুমন