এখনো চার্জশীট জমা হয়নি
তারিকুল ইসলাম শিবলী, কুমিল্লা : কুমিল্লার বহুল আলোচিত সোহাগী জাহান তনু হত্যার ২ বছর পূর্ণ হয়েছে গতকাল। ২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে খুন হয় তনু। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী তনুর চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার দুই বছরেও আদালতে চার্জশীট জমা দিতে পানি মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। দীর্ঘ ২ বছরেও শনাক্ত হয়নি তনুর খুনিরা। ঠিক কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে এ ব্যাপারটিও স্পষ্ট হয়নি আজও। পরদিন ২১ মার্চ তার বাবা ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি কুমিল্লা কোতোয়ালি থানা পুলিশ তদন্ত করে। পরে পুলিশ জেলা গোয়েন্দ বিভাগের (ডিবির) কাছে হস্তান্তর করে মামলাটি। এর পর ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ সন্ধ্যায় জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) থেকে মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে মামলাটি তারাই তদন্ত করছে। ঘটনা তদন্তে র্যাব ও পুলিশসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা মাঠে নামে। তনুর দুই দফা ময়নাতদন্ত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফরেনসিক বিভাগ মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ করতে পারেনি। শেষ ভরসা ছিল ডিএনএ রিপোর্ট।
২০১৭ সালের মে মাসে সিআইডি তনুর জামা-কাপড় থেকে নমুনা সংগ্রহ করে এর ডিএনএ পরীক্ষা করে। এতে ৩ জন পুরুষের শুক্রাণুু পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল। পরে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ ম্যাচিং করার কথা থাকলেও তা করা হয়েছে কিনা- এ নিয়েও গণমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেনি সিআইডি।
তনু হত্যা মামলার তদন্তের স্বার্থে ২০১৬ সালের ৯ এপ্রিল দ্বিতীয় ধাপে তৃতীয় বারের মতো ক্যান্টনমেন্ট বোডের এক্সিকিউটিভ সিইও মনিরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এরপর আরো দু’একজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তনু হত্যা মামলা তদন্ত সহায়ক দলের প্রধান সিআইডি ঢাকার বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দ পিপিএম এর নেতত্বাধীন তদন্ত দল।
এদিকে সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২২ নভেম্বর ঢাকা সিআইডি কার্যালয়ে তনুর বাবা ইয়ার হোসেন, মা আনোয়ারা বেগম, চাচাত বোন লাইজু ও চাচাত ভাই মিনহাজকে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিআইডির কর্মকর্তারা।
সর্বশেষ গত ১৯ মার্চ সোমবার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির কুমিল্লা কার্যালয়ে গেলে মামলার বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি কেউ।
এদিকে মামলার অগ্রগতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট আয়েশা বেগম শিরিন এবং কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের একটি জঙ্গল থেকে তনুর লাশ পাওয়া যায়। তাকে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। পুলিশ প্রাথমিকভাবে এটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে অনুমান করলেও তনুর ময়নাতদন্ত কিংবা ডিএনএ রিপোর্টে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান