উন্নত দেশগুলো স্বল্পোন্নত দেশকে সুবিধা দিচ্ছে না Ñতোফায়েল আহমেদ
জাফর আহমদ : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বিশ্ববাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) দোহা রাউন্ডে গৃহীত সিদ্ধান্ত সমূহ বাস্তবায়িত হলে বিশ^বাণিজ্য ক্ষেত্রে অনেক সমস্যার সমাধান হবে। এলডিসি ভুক্ত দেশগুলোকে ডব্লিউটিও-এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যে সকল সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা, সেগুলো সকল উন্নত দেশ দিচ্ছে না। বাণিজ্যমন্ত্রী গতকাল মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত ইনফরমাল ডব্লিউটিও মিনিস্টেরিয়াল মিটিং এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী সুরেশ প্রুভুর সভাপতিত্বে বাণিজ্যমন্ত্রীদের এ আলোচনা সভায় ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, কানাডা, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনামসহ বিশে^র ৫৩টি দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে স্ব স্ব দেশের মতামত দেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ডব্লিউটিও-কে কার্যকর করতে দোহা মিনিস্টেরিয়াল কনফারেন্সে গৃহীত সকল সিদ্ধান্তের পূর্ণ বাস্তবায়ন প্রয়োজন। হংকং, বালী এবং নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত মিনিস্টেরিয়াল কনফারেন্সগুলোও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ডব্লিউটিও-কে কার্যকর করতে নতুন করে ভাবতে হবে। নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে পূর্বের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর বাণিজ্য সক্ষমতা সীমিত হওয়ার কারণে ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে রপ্তানি বাণিজ্যে। তিনি বলেন, রপ্তানি বাণিজ্যে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর অবদান শতকরা একভাগের নিচে। দরিদ্র বিমোচন ও শিল্পায়নের জন্য এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর খাদ্য নিরাপত্তা, প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অবদান রাখার সুযোগ দেয়া প্রয়োজন।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে প্রবেশ করেছে। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২০২৭ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশের যাত্রা শুরু করবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল মধ্য আয়ের বাংলাদেশ গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এখন তা বাস্তব। উন্নয়নশীল দেশের জন্য যে সকল চ্যালেঞ্জ রয়েছে বাংলাদেশ সেগুলো মোকাবিলা করতে সক্ষম।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেয়া ‘এভ্রিথিংস বাট আর্মস‘ এর আওতায় বাংলাদেশকে দেওয়া ডিউটি ফ্রি ও কোটা ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা বাংলাদেশকে অনেক সহায়তা প্রদান করেছে। এর ফলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেক এগিয়ে গেছে। এজন্য বাংলাদেশ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতি কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশ এখন বিশে^ উন্নয়নের রোল মডেল। ডিজিটাল মধ্য আয়ের বাংলাদেশে ২০২১ সালের মধ্যে মানুষের মাথাপিছু আয় ২ হাজার মার্কিন ডলার হবে, যা ২০১১ সালে ছিল মাত্র ৭৫৫ মার্কিন ডলার। দরিদ্রসীমা ৪০ শতাংশ থেকে নেমে আসবে ১৫ শতাংশে। রপ্তানি বাণিজ্যে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি বিগত যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবার পর যে সকল বাণিজ্য চ্যালেঞ্জ আসবে সেগুলো মোকাবিলা করতে বাংলাদেশ সক্ষম। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এ বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে কাজ শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সফল ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। সম্পাদনা : আনিস রহমান