‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সতর্ক থাকতে হবে জঙ্গিগোষ্ঠীর ব্যাপারে’
আশিক রহমান : জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে আবারও চোরাগোপ্তা হামলার আশঙ্কা করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মে. জে. এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার (অব.)। তিনি বলেন, দেশের এখন যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা, জঙ্গিগোষ্ঠী সংঘবদ্ধভাবে বড় ধরনের কোনো নাশকতামূলক কর্মকা- চালাতে পারবে না। এটা জঙ্গিরা বোঝেছে। তবে আইসুলেটেড হয়ে আক্রমণ করার চেষ্টা করবে। এর আগে নির্বাচনের আগে-পরে, বিভিন্ন সময়ে চোরাগোপ্তা হামলার ঘটনা ঘটেছিল, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করেও এ ধরনের হামলার সম্ভাবনা রয়েছে।
আমাদের অর্থনীতির সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, হলি আর্টিজান হামলার আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছিল সারাদেশে। বিভিন্ন ধর্মগুরু, সেটা হিন্দু-বৌদ্ধ,-মুসলিমসহ সংখ্যালঘুসহ প্রায় সব সম্প্রদায়ের মানুষ হামলার শিকার হয়েছিল। এ ধরনের হামলা আগামীতেও হতে পারে। সেই সম্ভাবনা রয়েছে। বড় ধরনের নয়, ব্যক্তির উপর আক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা আছে। নির্বাচন ঘনিয়ে এলে সেটা আরও বাড়তে পারে। কারণ যেহেতু তারা সংঘবদ্ধভাবে বড় আকারে কোনো হামলা সংঘটিত করতে পারবে না, এ ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিয়ে ধরা পড়েছে, ফলে ব্যক্তির উপর আক্রমণ বাড়তে পারে। এ ধরনের আক্রমণ ঠেকানো অত্যন্ত কষ্টকর একটা ব্যাপার। সম্ভব তখনই যখন জনতা সতর্ক হয়। পুলিশের গোয়েন্দা তৎপরতা অত্যন্ত শক্তিশালী হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে এই নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য সব চেয়ে বড় হুমকি ছিল উগ্রবাদী জঙ্গিগোষ্ঠীর কাছ থেকে, সেই জায়গাটি এখন আমরা অত্যন্ত স্বস্তিকর একটা অবস্থায় আছি। কারণ গত দেড়-দুই বছর ধরে জঙ্গিগোষ্ঠী অনেক চেষ্টা, অপতৎরতা, হামলা চালানোর প্রস্তুতির প্রচেষ্টার পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথাসময়ে তাদের গ্রেফতার বা নিষ্ক্রিয় করে রাখার কারণে বড় ধরনের কোনো নাশকতা কর্মকা- চালাতে পারেনি। তবে খুব সম্প্রতি শিক্ষাবিদ ড. জাফর ইকবালের উপরে যেভাবে হামলা করা হলো তা বোঝা যাচ্ছে এই জঙ্গিগোষ্ঠী অনবরত একটা প্রচেষ্টা, পরিকল্পনায় রয়েছে।
তিনি বলেন, জঙ্গিগোষ্ঠী জাফর ইকবালের সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা বুদ্ধিজীবীদের খুব নিকটে চলে আসা জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ ধরনের আরও আক্রমণ চালাতে পারে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বড় বড় আক্রমণ প্রস্তুতি পর্ব প্রতিহত করে এসেছে। এটা চলমান রাখতে হবে। জঙ্গিদের শক্তভাবে প্রতিহত করার জন্য যে ব্যবস্থা রয়েছে সেই জায়গাটি আরও জোরদার করা দরকার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জঙ্গিদের প্রস্তুতি মূল্যায়ন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দিকে নজর দিতে হবে। কারো যদি সিকিউরিটি প্রটেকশন দেওয়া প্রয়োজন মনে হয় তাহলে তা দিতে হবে। সর্বোপরি সরকার ও দেশবাসীকে একসঙ্গে সতর্ক থাকতে হবে জঙ্গিগোষ্ঠীর ব্যাপারে।