এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা কাল শুরু প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে ব্যাপক প্রস্তুতি, ‘কোচিং সেন্টার দুর্নীতির আখড়া’
তরিকুল ইসলাম সুমন : ২০১৮ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে কাল। এ বছর ১৩ লাখ ১১ হাজার ৪৫৭ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসছে। পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস রোধে সরকারের পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী এবং দুদক চেয়ারম্যান। একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রের ২শ গজের মধ্যে জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ইতোমধ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে ও সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা নিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে দেশের ১০ শিক্ষাবোর্ড।
শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে শিক্ষার্থীদের ৩০ মিনিট আগেই পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মোবাইল ফোন নম্বরে সেটকোড ব্যবহারের নির্দেশনার এসএমএস যাওয়ার পর প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা যাবে। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেছেন, দেশের সব কোচিং সেন্টারই বেআইনি। কোনো ধরনের কোচিং সেন্টারই বৈধ নয়। আমরা আইন প্রয়োগ করে কোচিং সেন্টার বন্ধ করতে পারি না। পরীক্ষা শুরুর চার দিন আগে অর্থাৎ ২৯ মার্চ থেকে সব কোচিং বন্ধ রাখার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
গতকাল এক অনুষ্ঠানে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, যে কোনো মূল্যে সম্মিলিতভাবে দেশে প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং কোচিং বাণিজ্য চিরতরে বন্ধ করতে হবে। আমাদের সন্তানরা সারাদিন কোচিং সেন্টারে-সেন্টারে ঘুরে বেড়াবে তা হতে পারে না। কোচিং সেন্টার দুর্নীতির আখড়া। প্রশ্নফাঁস রোধ ও কোচিং সেন্টার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বানও জানান। তিনি শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারাই জাতি গঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আপনাদের সুযোগ-সুবিধা, সামাজিক মর্যাদা, বেতন বৃদ্ধিসহ সকল প্রকার উন্নয়নে দুদক আপনাদের পাশে থাকবে। শ্রেণিকক্ষে এমন শিক্ষার ব্যবস্থা করুন, যাতে আমাদের সন্তানদের কোচিং সেন্টারে যেতে না হয়।
ঢাকা বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সরকারের মাঠ প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের প্রস্তুতির পাশাপাশি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে ও সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা নিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে দেশের ১০ শিক্ষাবোর্ড। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে প্রত্যেক কেন্দ্রের জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট/দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নিয়োজিত থাকবেন। ট্রেজারি বা থানা থেকে কেন্দ্রসচিবসহ পুলিশ পাহাড়ায় কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র পৌঁছানো হবে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা দায়িত্বশীল কর্মকর্তা, কেন্দ্রসচিব ও পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বিধি অনুযায়ী প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা হবে। এসব দায়িত্ব যথাযথ পালনে কেন্দ্রসচিবদের নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলো।
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় তত্ত্বীয় পরীক্ষা চলবে ২ এপ্রিল থেকে ১৩ মে পর্যন্ত। ব্যবহারিক পরীক্ষা চলবে ১৪ মে থেকে ২৩ মে পর্যন্ত।