সরকারি আমানত হ্রাস ৫০ হাজার কোটি টাকা আমানত হারাবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো
সোহেল রহমান : সরকারি আমানতের অর্ধেক (৫০ শতাংশ) বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে রাখলে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা আমানত হারাবে রাষ্ট্রায়ত্ত (বাণিজ্যিক ও বিশেয়ায়িত) ব্যাংকগুলো। অন্যদিকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর আমানত প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বাড়বে। গত শুক্রবার বেসরকারি ব্যাংকগুলোর উদ্যোক্তাদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ব্যাংকস’ (বিএবি)-এর সঙ্গে এক বৈঠকে সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার ঘোষণা দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। প্রচলিত রীতি অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে সরকারি আমানতের হার হচ্ছে যথাক্রমে ৭৫ শতাংশ ও ২৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, গত সেপ্টেম্বর শেষে দেশের ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতের পরিমাণ ছিল ৯ লাখ ৪০ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি আমানতের পরিমাণ হচ্ছে ১ লাখ ৮১ হাজার ৮৪ কোটি টাকা। সে হিসাবে ব্যাংকিং খাতের প্রায় ২০ শতাংশ আমানত হচ্ছে সরকারি।
ব্যাংকের ক্যাটাগরি ভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোতে সরকারি আমানতের পরিমাণ হচ্ছে যথাক্রমে ১ লাখ ৫ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা এবং ৭ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। অন্যদিকে দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে (সকল ইসলামী ব্যাংকসহ) এর পরিমাণ হচ্ছে ৬৫ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। যা ৩৩ শতাংশেরও বেশি। এর মধ্যে শুধু ইসলামী ব্যাংকগুলোতে সরকারি আমানতের পরিমাণ হচ্ছে ১৩ হাজার ২৩২ কোটি টাকা। এছাড়া দেশে ব্যবসা পরিচালনারত বিদেশী ব্যাংকগুলোতে ৩ হাজার ২২১ কোটি টাকা সরকারি আমানত রয়েছে।
বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে সরকারি আমানতের হার বাড়ানোর বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মোঃ ইউনুসুর রহমান ‘আমাদেও অর্থনীতি’-কে বলেন, ‘বর্তমানে ব্যাংকিং খাতের লেনদেনের প্রায় ৭০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকগুলোর দখলে। সুতরাং বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে সরকারি আমানতের হার বাড়ানোর বিষয়ে তাদের দাবির যৌক্তিকতা রয়েছে। তবে বর্তমানে সরকারি আমানতের ২৫ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে রাখার কথা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই অধিক মুনাফার কারণে অতিরিক্ত অর্থ জমা রাখা হচ্ছে। এটি যথাযথ মনিটরিং করা দরকার।’