ফার্স্টট্র্যাক প্রকল্প, ২০ এপ্রিল এলএনজিবাহী জাহাজ আসছে
বিশ্বজিৎ দত্ত : সরকারের এলএনজি আমদানির প্রকল্প বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে আগামী ২০ এপ্রিল। জাহাজে করে এলএনজির প্রথম চালানটি পৌঁছাবে কক্সবাজারের মহেশখালিতে। তবে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে ২৫ এপ্রিল। সরকারি মালিকানাধীন রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি কাতার থেকে এই গ্যাস আমদানি করছে। এটিই হবে সরকারের ১০টি ফার্স্টট্রেক প্রকল্পের মধ্যে ১টির সফল সম্পন্ন কাজ।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে ফার্স্টট্রেক প্রকল্প হিসাবে সরকার এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরে প্রকল্পটি আর্থিক কারণে কয়েক দফা পিছিয়েছে। সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে ২০২৫ সালের মধ্যে ৪০০ কোটি ঘনফুট এলএনজি আমদানির।
এ বিষয়ে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী ফেরদৌসি বেগম জানান, এলএনজি আসলে প্রাকৃতিক গ্যাস। অন্য দেশ থেকে এই গ্যাস আনতে চাইলে পাইপলাইন বসাতে হয় তা অনেক ব্যয়বহুল। তাই তরল আকারে এই গ্যাস জাহাজে করে আনা হয়। এর তাপমাত্রা থাকে মাইনাস ১৬২ ডিগ্রীতে। প্রথম চালানে ৫০০ এমএমজি গ্যাস আমদানি হবে। এটি বাংলাদেশে প্রথম গ্যাস আমদানি। সরকারের ফার্স্টট্রেক প্রকল্পগুলোর মধ্যে একটি। মহেশখালিতে তৈরি হয়েছে ভাসমান টার্মিনাল। ওখানেই গ্যাস খালাস করা হবে। পরে পাইপ দিয়ে নেয়া হবে এফএসআরইউয়ে (ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রি গ্যাসিফিকেশন)। আমরা আশা করবো প্রকল্পটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। তবে এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। গ্যাসের মূল্য সম্পর্কে তিনি বলেন, এখনো মূল্য নির্ধারণ করা হয়নি। উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে।
জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত আইনের আওতায় দ্রুত এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমদানিতে সরকারের খরচ পড়বে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। সরকার এলএনজির দাম কমানোর জন্য এর উপর আরোপিত সকল ধরনের ট্যাক্স ও ভ্যাট রহিত করেছে। তার পরেও প্রতি ঘনফুট গ্যাসের দাম পড়বে ২৭ টাকা। বর্তমানে গ্যাস সরবরাহ করা হয় প্রায় ৮টাকা ঘনফুট হিসাবে। বর্তমানে গ্যাসের চাহিদা দৈনিক ৩৫০ কোটি ঘনফুট আর সরবরাহ ২৭০ কোটি ঘনফুট।
বেশি দামে এলএনজি আমদানির সমালোচনা করে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ম তামিম বলেন, এত দামে এলএনজি আমদানি করে সরবরাহ করলে জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পাবে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজির দাম বৃদ্ধি পেলে দেশের অর্থনীতির জন্য ভবিষ্যতে বড় সমস্যার সৃষ্টি করবে। দেশে বাড়তি এলএনজি আমদানি না করে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে জোর দিলে সবচেয়ে ভাল হতো।
ভ্যাট ও ট্যাক্স মওকুফ প্রসঙ্গে রাজস্ব বোর্ডের সদস্য ফিরোজ শাহ আলম জানান, আমদানিতে এআইটি, শুল্ক ও ভ্যাট রয়েছে। এলএনজি আমদানিতে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এগুলো মওকুফের। আমরা শুধু তা পালন করেছি।