ধর্ষণকারীদের আইনানুগভাবে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে
ড. তানিয়া রহমান
আমাদের দেশে দিন দিন যে পরিমান নারী, শিশু ধর্ষণের শিকার হচ্ছে সেটি আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে নৈতিকতার অভাবে হচ্ছে। আমাদের দেশে এবং বিদেশে যেটি ঘটছে সে ঘটনা গুলোর সম্প্রচার করে থাকি, সেটির সর্বশেষ কি হচ্ছে তা সম্প্রচারিত হয় না। যারা ধর্ষণ করে থাকে, তাদেরকে কি সাজা দেওয়া হচ্ছে, সেটি প্রচার করা হয় না। একটি উদাহরণ : আমরা একটি প্রশ্নের উত্তর লিখলাম কিন্তু তার উপসংহার কি হয় সেটি লিখলাম না, তাহলে উত্তর পরিপূর্ণ বোঝা যাবে না। আমরা একটি ধর্ষণের ঘটনা তুলে ধরলাম কিন্তু তার সর্বশেষ কি হল, সেটি তুলে ধরলাম না। তার কি শাস্তি দেওয়া হল, সেটি তুলে ধরলাম না। সমাজের কি করা প্রয়োজন, সেটি তুলে ধরা হয় না। যারা এ কাজগুলো করে তারা চিন্তা করে থাকে, যারা ধরা পড়ছে তাদের কোন শাস্তি হলো না। এমন কি কেউ ধরা পড়ে সেটি আবার চাপা পড়ে গেছে, তখন তারা এ খারাপ কাজ গুলো করার সুযোগ পায়। তারা আবারো এ খারাপ কাজগুলো বেশি করে করতে উৎসাহিত হয়। এজন্য আমাদের সমাজে মানুষের মূল্যবোধ সৃষ্টি করতে হবে। মুখে এক রকম কথা বলব, কাজ করার সময় অন্য রকম কাজ করব, সেটি করা ঠিক হবে না। বর্তমানে সমাজে এমন সমস্যা হচ্ছে, তার ফলাফল এটিই প্রমাণ করে। যদি নারী নির্যাতন বা নারী, শিশু ধর্ষণ হয় সঙ্গে সঙ্গে তার বিচার কার্যক্রম হচ্ছে না। শাজনীনকে ধর্ষণ করে তাকে হত্যা করা হল। তার হত্যার কত দিন পরে মামলা হল। এমন ঘটনা অনেক আছে যাদের বিচার কাজ অনেক দেরিতে করা হয়। ধর্ষণের বিচার আইন অনুযায়ি হবে, অপরাধীকে যে সাজা দেওয়া দরকার তাকে সেভাবে সাজা দিতে হবে। আইন অনুযায়ি সাজা দেওয়া হলে তারা এ ধরণের পাপ কাজ থেকে দূরে থাকবে। যারা শিশু ও বয়স্ক মহিলাদের ধর্ষণ করে থাকে, তারা কোন সুস্থ্য মস্তিকের মানুষ নয়। তারা বিকৃত মনমানসিকতার অধিকারী। কখন মানুষের সাহস বৃদ্ধি পায়? যখন একটি খারাপ কাজ করেও তার বিচার না হয় । তখনই এ খারাপ কাজগুলো বেড়ে যায়। এজন্য আমাদের দরকার আমাদের নিজেদের মধ্যে মূল্যবোধ বৃদ্ধি করা। সমাজে সব মানুষের মূল্যবোধ বৃদ্ধি করা এবং আইনটাকে সঠিকভাবে পরিচালনা করা। আইন অনুযায়ি সঠিক ভাবে বিচার করা হলে এ ধরণের কাজ আমাদের সমাজে হবে না।
পরিচিতি : অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়/মতামত গ্রহণ : রাশিদুল ইসলাম মাহিন/ সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ