অনৈতিকতার অভিযোগ থেকে ট্রাফিক পুলিশকে সরে আসতে হবে
মে. জে. (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার
যে বাসগুলো রাস্তায় নামে তাদের ড্রাইভারেরা যেভাবে বাস চালায়, তাতে মনে হয় না আমাদের একটা লাইফ আছে। আমার মনে হয় না, রাস্তার অধিকাংশ বাসের ফিটনেস আছে। এই সমস্ত বাসগুলো রাস্তায় থাকলে নানা ধরনের দূর্ঘটনা হয়। আর এই ধরনের গাড়ি রাস্তায় কখন থাকে? যখন যারা এর নিয়ন্ত্রক, সঠিকভাবে এটাকে রেগুলেট না করে, মনিটরিং না করে, রাস্তায় গাড়ি চেক না করে, তখন কিন্তু এ ধরনের বাস নামে। আর এ সমস্ত গাড়ি যখন রাস্তায় নামে তাদের সাথে যে ড্রাইভার থাকে, হেল্পার থাকে, তারা হয় অদক্ষ, যার জন্য আমরা লক্ষ্য করি এ ধরনের বড় বড় দূর্ঘটনা। ট্রাফিক পুলিশ সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করছে না এর দুটি কারণ আছে। একটি কারণ হলো এটি ইনফোর্স করার জন্য যে ধরনের কঠোর নিয়ম নীতি আছে, সেটি বাস্তবায়ন করার জন্য যে মনোভাব বা অঙ্গিকার থাকা দরকার, সেটা তাদের মধ্যে আছে বলে আমার মনে হয় না। দুই নাম্বার হলো, রাস্তার উপর যে অসংখ্য গাড়ি পার্কিং থাকে, সেখানেও সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রন নাই আর নিয়ন্ত্রন করতে গেলে এখানে যারা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আছেন, তাদের বিরুদ্ধে নানা অনৈতিকতার অভিযোগ উঠে। এরকম অভিযোগ উঠলে কিন্তু তারা আর নিয়ন্ত্রন করতে পারবে না। তিন নাম্বার হলো, যারা ভিআইপি কালচারের আছেন, তাদের কোন ট্রাফিক আইন নাই। এখানে পুলিশ অসহায়ের মত থাকে। সুতরাং ভিআইপি কালচার থেকে যদি বের না হওয়া যায়, পৃথিবীতে সভ্য দেশের কেউ ট্রাফিক আইনের উর্ধে নয়। সাধারনভাবে যারা রাস্তায় চলাচল করে, তারা কেউ ট্রাফিক আইনের উর্ধে নয়। কিন্তু এখানে তারা ট্রাফিক আইন মানছে না। আর পুলিশও তাদের বিরুদ্ধে ইনফোর্স করতে পারছে না। বর্তমানে ঢাকা শহরে শত শত মটর সাইকেল চলছে। এগুলোর বেশির ভাগ বাহকই ট্রাফিক আইন মানছে না। এদেরকে শক্তভাবে যদি দমন না করা যায়, তাহলে এরকম দূর্ঘটনা অহরহ ঘটতেই থাকবে। অনেক সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের পর্যাপ্ত জনবল নেই, এই বিষয়ে আমি একমত নই। তারা যদি নৈতিকতার সাথে অঙ্গিকার নিয়ে দায়িত্ব পালন করে, তাহলে সবাই আইন মেনে চলতে বাধ্য হবে। ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে যে অনৈতিকতার অভিযোগ উঠে, কোথাও কোথাও ক্ষমতাবানদের ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠে, সেখান থেকে তাদেরকে সরে আসতে হবে। এটা থেকে যদি তারা সরে আসে এবং সবার জন্য আইন সমান হয় এবং কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করে, তাহলে দূর্ঘটনা বহুলাংশে কমে যাবে বলে আমি মনে করি।
পরিচিতি : নিরাপত্তা বিশ্লেষক/ মতামত গ্রহণ : মো. এনামুল হক এনা/সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ