পররাষ্ট্রমন্ত্রীর রাশিয়া সফরে পশ্চিমাদের অসন্তোষ
তরিকুল ইসলাম : পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সাম্প্রতিক রাশিয়া সফরে পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে এক ধরণের অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি এমন এক সময় দেশটিতে সফর করলেন যখন সাবেক রুশ গুপ্তচর ও তার মেয়েকে নার্ভ এজেন্ট দিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মস্কোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশকে পাশে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা। যদিও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে মাহমুদ আলীর বৈঠকে এ নিয়ে নীতিগত কোনো সিদ্ধান্ত পৌঁছেনি ঢাকা-মস্কো। তবুও এ সফরকে ঘিরে বৃহস্পতিবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশস্থ বেশ কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা।
বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও মিশন প্রধান গত বৃহস্পতিবার আমাদের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে কূটনীতিক প্রত্যাহার ও বহিস্কারের শীতল যুদ্ধে অংশ নেওয়া দেশগুলোর সংখ্যা এখন যেভাবে রয়েছে এভাবেই থাকবে না। ক্রমেই সেটি বাড়বে। বিশ্বে পশ্চিমা দেশগুলোর সবচেয়ে বেশি বন্ধু রয়েছে এবং তাদের সঙ্গে বোঝাপাড়াও বেশ ভালো। বাংলাদেশ এর বাইরে নয়। রাশিয়ার সঙ্গে বিভিন্ন দেশ যখন কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে চলছে সে সময় এ সফরটা ব্যতিক্রমই বটে!
বৈশ্বিক সমর্থন আদায়ের চেষ্টার অংশ হিসেবে মার্কিন, ব্রিটেনসহ তার মিত্র দেশগুলো এ ইস্যুতে ঢাকার সমর্থন আদায়ে সক্রিয় রয়েছে। রুশ গুপ্তচর ও তার মেয়েকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মস্কোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জুয়েল রিফর্বাহী চেয়ারের দায়িত্ব পালন করছে বাংলাদেশ। কি ধরনের গ্যাস ব্যবহার করে হত্যার চেষ্টা হয়েছে তাই তদন্ত করছে বৈশ্বিক রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ বিষয়ক সংস্থা ওপিসিডব্লিউ। ওই সংস্থার বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশের নিরপেক্ষ অবস্থানে রয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে রাশিয়া কোনোভাবেই যুক্ত নয় দাবি করে গত ২২শে মার্চ একটি কূটনৈতিক পত্র পাঠিয়েছে রাশিয়া। পশ্চিমা দেশগুলোর অন্যায়মূলক আচরণের সঙ্গে বাংলাদেশ যেনো না জড়ায় সে বিষয়টি উল্লেখ করা হয় দেশটির পাঠানো কূটনৈতিক পত্রে।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্যের সলসবুরিতে গত ৪ঠা মার্চ এ ঘটনার পরবর্তীতে প্রায় ১৫০ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ অন্তত ২৪টি দেশ। পাল্টা জবাবে রাশিয়া ৬০ জন মার্কিন কূটনীতিকসহ ওই দেশগুলোর ১৬৯ জন কূটনীতিককে বহিস্কার করে।