বঙ্গবন্ধুর সহচর আমান উল্লাহ খানের স্মরণসভা এমপির নির্দেশে বন্ধ
মো. ইউসুফ আলী বাচ্চু : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, সাবেক সাংসদ, প্রবীন রাজনীতিবিদ ও জয়লাজুয়ান ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত সাংবাদিক আমান উল্লাহ খানের স্মরণে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি করে আমন্ত্রিত না করায় বগুড়া-৫ শেরপুর-ধুনট আসনের আওয়ামী লীগ সমর্থিত এমপি হাবিবুর রহমান ক্ষিপ্ত হয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে স্মরণসভা বন্ধ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানিয়েছেন, ওই অনুষ্ঠানে স্থানীয় এমপি এবং তার অনুসারীদের আমন্ত্রণ না জানানোর কারণেই পুলিশি ব্যবস্থার মাধ্যমে অনুষ্ঠান পূর্বকালিন সময়ে বন্ধ করে দেন তিনি।
তবে, বিষয়টি অস্বীকার করেছেন শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, যাদের বাপের অনুষ্ঠান তারাই ছিল না। অনুষ্ঠান ঘিরে সংঘর্ষ হওয়ার আশষ্কা ছিল। তাই পুলিশ পাঠিয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করেছি ।
৩১ মার্চ শনিবার সকালে জয়লাজুয়ান ডিগ্রি কলেজের আয়োজনে কলেজ ক্যাম্পাসে ওই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘকালিন ক্ষমতা, প্রচুর অর্থ-সম্পদ এবং গুটি কয়েক স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে গ্রুপিংয়ের ফলে শাসনের নামে দু:শাসন চালিয়ে যাচ্ছেন এমপি হাবিবুর রহমান। তারই পুত্র প্রকৌশলী আসিফ ইকবাল সানির বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট করে কোটি কোটি টাকা লোপাট, হরিলুটের অভিযোগ, ঠিকাদার নিয়োগ, নিয়োগ বাণিজ্য, স্থানীয় রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ ও অবৈধ বালু ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া এমপির আস্তাভাজনরা অবৈধভাবে অঢেল অর্থের মালিক হয়ে স্থানীয় এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলছেন। এমপির আস্তাভাজন ডিও ব্যবসায়ী, খামারকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মোমিন ওরফে মহসিন এবং বিদুৎ, বালু ব্যবসায়ী ও সুঘাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামন জিন্নাহ উল্লেখযোগ্য।
সূত্রে আরও জানা যায়, এমপি হাবিবুর রহমান, তার ছেলে আসিফ ইকবাল সানি ও এমপির আস্তাভাজনদের নেতিবাচক কর্মকান্ডের দায়ভার পড়ছে স্থানীয় আওয়ামী লীগে। ফলে একাদশ সংসদ নির্বাচন মুহুর্তে শেরপুর-ধুনটের দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্য তৈরী হচ্ছে বিভাজন। যার দায়স্বরুপ দলে মধ্যে বড় ধরনের ফাটলের শঙ্কাও আছে বলে উদ্বেগ, উৎকন্ঠা প্রকাশ করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের জেষ্ঠ্য নেতারা।
জয়লা জুয়ান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হোসেন আলী বলেন, বড় ধরনের রাজনৈতিক চাপে পড়েই আমান উল্লাহ খান সাহেবের স্মরণসভা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছি। এমন কি কারণে স্থগিত করলেন’ এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, একটি অদৃশ্য চাপ আসতে ছিলো অনুষ্ঠান স্থগিত না করলে বড় ধরনের মারামারি ও রক্তপাত ঘটতো।
এবিষয়ে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও শেরপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মজনু বলেন, কলেজ পরিচালনা পরিষদ, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষার্থীরা ও স্থানীয় এলাকার লোকজন শ্রদ্ধেয় প্রয়াত সাংবাদিক ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর আমান উল্লাহ খান সাবেবের স্মরণে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছিলেন। পরবর্তীতে শুনলাম এমপিকে প্রধান অতিথি না করাই ক্ষিপ্ত হয়ে নিজেই ওই অনুষ্ঠান বাতিল করে দিয়েছেন।
জানতে চাইলে বগুড়া-৫ শেরপুর-ধুনট আসনের এমপি হাবিবুর রহমান বলেন, আমাকে অতিথি, এগুলো নিয়ে আমি কোন চিন্তাও করিনা। কোথায় আমাকে অথিতি করলো, না করলো এটা আমি মনে করি না। যেটা আমি শুনেছি বড় আকারে ওখানকার লোকজন অ্যারেজমেন্ট করবে। ওই কলেজের সভাপতি ইউনো।