কোটা সংস্কারের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ, সংঘর্ষ
ইসমাঈল হুসাইন ইমু ও জিয়াউদ্দিন রাজু : চাকরিতে কোটা পদ্ধতির সংস্কার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা। এসময় শাহবাগ মোড়ে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাস্থলে জলকামান নিয়ে কয়েক প্লাটুন পুলিশ অবস্থান নিলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বা কাউকে আটকও করা হয়নি।
গতকাল বেলা আড়াইটায় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর সামনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে হাজারো শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা সমাবেত হয়। এরপর সমাবেশস্থল থেকে মিছিল করে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনের রাস্তা দিয়ে রাজু স্মৃতি ভাস্কর্য হয়ে নীলক্ষেত ও কাঁটাবন ঘুরে শাহবাগের মোড়ে এসে অবস্থান নেন। ‘দাবি মোদের একটাই, কোটার সংস্কার চাই’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই, ‘কোটা দিয়ে কামলা নয়, মেধা দিয়ে আমলা চাই,’ ‘১০%-এর বেশি কোটা নয়’Ñ মিছিল থেকে এসব স্লোগান দেয়া হয়।
ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসান আল মামুন বলেন, সংসদে অধিবেশন চলছে, সংসদে যারা আছেন তারা আমাদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত। আজকে আমরা দেখব, তারা জনগণের জন্য কী করেন। সংসদে আমাদের পক্ষে সিদ্ধান্ত নিলে তবেই আমরা রাস্তা ছাড়ব। আমাদের আন্দোলন সম্পূর্ণ অহিংস, কেউ যদি আমাদের বুকে গুলিও চালায়, আমরা কিছু করব না।
বিকাল ৫টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা জোনের সহকারী উপ-কমিশনার (এডিসি) আজিমুল হক ‘জনদুর্ভোগ’ সৃষ্টি না করে সরে যেতে বললেও বিক্ষোভকারীরা অনড় থাকে। এসময় বেশকয়েকজন হাতে গোলাপ নিয়ে পুলিশের দিকে এগিয়ে গেলে একপর্যায়ে পুলিশ বাধ্য হয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
শাহবাগ থানা অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসান বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আসা শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা শান্তিপূর্ণ গণপদযাত্রা করে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছে। সেখানে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাও উপস্থিত ছিলÑ কোনো রকম নৈরাজ্য বা অপ্রীতিকর ঘটনার উদ্ভব হয়নি।
কোটা পদ্ধতির সংস্কারের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন চলছে। ১৪ মার্চ ৫ দফা দাবি নিয়ে স্মারকলিপি দিতে সচিবালয় অভিমুখে যাওয়ার পথে হাইকোর্ট মোড়ে পুলিশ আটকে দেয়। পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ করে এবং অর্ধশত শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে। সন্ধ্যার পর সহপাঠীদের মুক্তির দাবিতে ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী শাহবাগ থানার সামনে অবস্থান নিলে রাতে থানা থেকে আটক সবাইকে ছেড়ে দেয়া হয়।
জানা গেছে, সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫৬ শতাংশ কোটা সংস্কার করে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে ৫৫ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের অগ্রাধিকার কোটা রয়েছে। আর বাকি ৪৫ শতাংশ নিয়োগ হয় মেধা কোটায়। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী