আগামী জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন প্রয়োজন : সিইসি
সাইদ রিপন : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেছেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আগামী জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হওয়া উচিত। তবে আমরা কমিশনাররা বৈঠক করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবো। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে যখন পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক চলছে তখন মোতায়েনের পক্ষে ব্যক্তিগত মত দিলেন সিইসি। গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে প্রবাসী ভোটাধিকার প্রবর্তন: সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক শেষে এমত ব্যক্ত করেছেন সিইসি। ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ (ইডব্লিউজি) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান অভিযোগ করেন, আমাদের দেশে নির্বাচনে পেশি শক্তির ব্যবহার হয়। আমরা শুরু থেকে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়ে এসেছি। কিন্তু একটি দল সেনা মোতায়েন চায় না। এখানে ইসি ব্যবস্থা না করলে আমাদের করার কিছু নেই। আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, যতদূর জানি আগামী নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হবে। এ ব্যাপারে ইসি ব্যবস্থা নেবে। নির্বাচন যেন অংশগ্রহণমূলক হয়, সবাই যেন নির্বাচনে অংশ নিতে পারে সেটাই আমরা চাই। এখানে সবার সহযোগিতা করতে হবে। পরে সেনা মোতায়েন নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শীর্ষ দুই নেতার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সিইসির বক্তব্য জানতে চান সাংবাদিকরা। তখন সিইসি সেনা মোতায়েনের ব্যাপারে তার নিজের মত দেন। তবে এ ব্যাপারে এখনই চূড়ান্ত কিছু বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি জাতীয় নির্বাচনে সেনা চাইলেও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের পক্ষে নন।
বক্তব্যের শুরুতে সিইসি বলেন, ভোট গ্রহণের দায়িত্ব পালনকারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, কারাবাসী অথবা প্রবাসী সব মিলিয়ে ১০ থেকে ১২ লাখ ভোটার আছে। তারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন না। তবে তাদের ভোট দেয়ার দুটি নিয়ম প্রচলিত আছে। একটি পোস্টাল ব্যালট এবং অপরটি প্রক্সি সিস্টেম। তফসিল ঘোষণার ১৫ দিনের মধ্যে এসব মানুষকে রিটার্নিং অফিসার বরাবর ‘আমি ভোট দিতে চাই’ মর্মে আবেদন করতে হয়। সে ক্ষেত্রে তার জন্য ব্যালট পাঠানো হয়। আগামী নির্বাচনের আগে এ পদ্ধতি নিয়ে ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালানো হবে। এছাড়া বিভিন্ন দেশে নিয়োজিত রাষ্ট্রদূতদের কাছে এ বিষয়ে চিঠিও পাঠানো হবে। প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের বিষয়ে সব ধরনের আলোচনা করা হবে। আগামী ১৯ এপ্রিল এ ব্যাপারে কমিশন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে বলে জানান সিইসি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক রাষ্ট্রদূত আবদুল মুমিন চৌধুরী, নাসিম ফেরদৌস, ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের পরিচালক আবদুল আলিম। অনুষ্ঠানের কি-নোট উপস্থাপন করেন ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য আবদুল আউয়াল। কি-নোটে জানানো হয়, ২০১৭ সালের মাঝামাঝিতে প্রবাসীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৭৫ লাখ। এর বাইরেও দেশের বাইরে অনেকেই থাকেন। তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের ব্যবস্থা কীভাবে করা যায় এর সুপারিশ উঠে আসে কি-নোটে।