অলি-মোদি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক: নেপালের সঙ্গে রেললাইনে সংযুক্ত হবে ভারত
সাউথ এশিয়ান মনিটর : সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং জলপথ পরিবহণের ব্যবস্থা আরও উন্নত করার পাশাপাশি নেপালের সঙ্গে রেলপথে সংযুক্ত হবে ভারত। নেপালি প্রধানমন্ত্রীকে এমনই আশ্বাস দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তিনদিনের সফরে ভারতে এসেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী খড়্গপ্রসাদ অলি। শনিবার দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়। বৈঠকের পর বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কৃষির ক্ষেত্রেও নেপালকে আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
সেই বিবৃতিতেই ভারত এবং নেপালের রাজধানী কাঠামান্ডুর মধ্যে নতুন রেলপথ তৈরির কথা বলা হয়। মোদি বলেন, ‘আমরা আমাদের মিত্র দেশের সহযোগিতা এবং সমর্থন চাই। দু’দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি এবং অর্থনৈতিক লেনদেন বাড়ানোই এখন লক্ষ্য।’
গত বছর নেপালে কমিউনিস্ট সরকার গঠিত হওয়ার পরেই চিন্তার ভাঁজ পড়ে ভারতের কপালে। চীনের সঙ্গে সখ্যতা বাড়াবে নেপাল, এমন সংশয় ঘোরাফেরা করতে শুরু করে নয়াদিল্লিতে। কিন্তু ভারতকে ছাড়া নেপালের যে চলবে না সে কথাও নেপালের প্রধানমন্ত্রী। নেপালকে তিন দিক দিয়ে ঘিরে রেখেছে ভারত। চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে ভারতকে যে তিনি চটাবেন না সে কথাও ঘুর পথে বুঝিয়ে দিয়েছেন অলি। জানিয়েছেন ভারতের সঙ্গে সখ্যতা আরও বাড়াতে চান তিনি। তিনি বলেন, “ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব আরও বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই আমি ভারতে এসেছি।”
নেপালের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরেই ভারতে এসেছেন অলি।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী অলি নেপালে ভারতীয় শিল্পপতি বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। ভারতীয় শিল্পপতিদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন নেপাল সুষ্ঠু বাণিজ্যিক পরিসর দিতে সক্ষম। কাজেই ভারতীয় শিল্পপতিরা নেপালের পরিকাঠামো, পর্যটন, শক্তি, কৃষি ও তথ্যপ্রযুক্তি শাখায় বিনিয়োগ করতে পারেন।
কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ড্রাসট্রিজ (সিআইআই)সহ অন্যান্য শিল্প সংগঠন আয়োজিত ইন্দো-নেপাল বাণিজ্য ফোরামে কে পি শর্মা অলি জানিয়েছেন নেপালে এক শক্তিশালী সরকার রয়েছে। কাজেই সরকারের স্থায়িত্ব বিভিন্ন নীতির বাস্তবায়ন ও ধারাবাহিকতাকে বজায় রাখা। এখন নেপালে আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি হয়েছে। সে কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সেখানে লগ্নিতে কোনও সমস্যা নেই।
কে পি শর্মা অলির আবেদন, ‘এই মুহূর্তে নেপালের সব ক্ষেত্রেই বড় ধরনের বিনিয়োগ প্রয়োজন। তিনি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ভারত গোটা বিশ্বে বিনিয়োগ করছে। তাহলে কেন তারা তাদের একেবারে পাশের দেশে বিনিয়োগ করবে না? ভৌগোলিক সুবিধা ছাড়াও সেখানে যাতায়াতের সুবিধা এবং সাংস্কৃতিক সাদৃশ্য রয়েছে। নেপালে এই সবকিছুই আপনাদের বিনিয়োগে সহায়ক। এই সুযোগ গ্রহণ করুন।
নেপাল বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শিল্পপতিদের কী কী সুবিধা রয়েছে সংশ্লিষ্ট ফোরামেও তুলে ধরেন নেপালের অলি। তিনি দাবি করেন, নেপালে যেকোনও ক্ষেত্রে বিনিয়োগই লগ্নিকারীদের লাভের মুখ দেখাবে। তাঁর মতে, নেপাল সরকার শিল্পপতিদের সবরকম সুবিধা দিতে প্রস্তুত যা তাদের বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজন।