ঠাকুরগাঁওয়ে কেঁচো কম্পোস্ট সার উৎপাদন
সাইফুল ইসলাম প্রবাল, ঠাকুরগাঁও
কৃষি জমির ক্ষয়রোধ ও উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষকের ঘরে ঘরে উৎপাদন হচ্ছে জৈব পদ্ধতিতে কেঁচো সার। জেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এ জৈব সার । এ সার ব্যবহার করে কাঙ্খিত ফলনও পাচ্ছে চাষিরা। অন্যদিকে রাসায়নিক সারের ওপর চাপ কমায় উৎপাদন খরচ সাশ্রয় হচ্ছে। কৃষি বিভাগ বলছে, এ বছর জুনের মধ্যেই সমগ্র জেলায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে জৈব সারের ব্যবহার ও উৎপাদন। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বেশিরভাগ কৃষকেরা একসময় শুধুমাত্র রাসায়নিক সার ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন করতেন। এতে জমির অম্লত্ব ও ক্ষারত্ব বৃদ্ধি পায়। এ অবস্থায় কৃষি বিভাগের পরামর্শে ২০১৫ সালে ওই ইউনিয়নের ছোট বালিয়া গ্রামের ২ শতাধিক কৃষক সিমেন্টের রিং ও বিশেষায়িত কেঁচো দিয়ে প্রথম শুরু করেন কেঁচো জৈব সার তৈরির কাজ।
এজন্য সিমেন্টের তৈরি রিংয়ে গোবর দিয়ে সেখানে ২শ থেকে ২শ ৫০টি কোঁচো ছেড়ে দিয়ে প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। ৩০-৪০ দিনের মধ্যে কেঁচোগুলি বিপাকীয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের মল ত্যাগ এবং মুখের বিশেষ লালা দিয়ে তৈরি করে কেঁচো জৈব সার। ওই সার জমিতে প্রয়োগ করে আশানুরূপ উৎপাদন পেয়ে ওই সারের চাহিদা বেড়ে যায়। পরের বার বগুলাডাঙ্গী গ্রামের ৩শ ও বানিয়াপাড়া গ্রামের ২ শতাধিক পরিবারে নিজ বাড়িতে কেঁচো সার উৎপাদন করতে থাকে। এ সার প্রযোগ করলে জমিতে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয় না। জমির স্বাস্থ্য ও মাটির গুনাগুন ভাল থাকে এবং উৎপাদন আগের চাইতে বৃদ্ধি পায়। সদর উপজেলার সিংগিয়া গ্রামের কৃষক ইসহাক আলী বলেন, সবজিসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে কেঁচো কম্পোস্ট সার প্রয়োগে খরচ হয় আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত। কিন্তু রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে সেই ফলনে খরচ হয় ৩ গুন টাকা। একদিকে এই কেঁচো কম্পোষ্ট সার মাটিকে যেমন করে উর্বর ও সুরক্ষা তেমনি ফলনও ভাল হয় খরচও কম হয়। ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কেএম মাউদুদুল ইসলাম বলেন, সদর উপজেলার জংগলিপাড়া ও বগুলাডাঙ্গী গ্রামের সাড়ে ৭শ পরিবার কেঁচো কম্পোস্ট সার উৎপাদন করছে। এ সারের উৎপাদন ছড়িয়ে পড়েছে জেলার পীরগঞ্জ, রানীশংকৈল, বালিয়াডাঙ্গী ও হরিপুর উপজেলাতেও। আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে জৈব সার উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়াতে বিশেষ কর্মসূচি নিয়েছে কৃষি বিভাগ।