ভিসির বাড়িতে হামলা প্রতিরোধ করতে না পারা পুলিশের ব্যর্থতা
ড. অনুপম সেন
কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রথমদিনে ঢাকা ভার্সিটির উপাচার্যের বাসভবনে পুলিশ থাকার পরেও এমন ঘটনা হয়েছে। উপাচার্যের বাড়িতে হামলা প্রতিরোধ করতে না পারা বলা যায় পুলিশের ব্যর্থতা। তার বাড়িতে কিছু মুখোশধারি লোক ঢুকে এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। ওই বাড়িতে একটি ১শ বছরের পুরানো টেবিল ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। আসবাবপত্র সহ টিভি, ফ্রিজ, প্রচন্ড ধবংস করা হয়েছে বাড়ির ভিতরে। বাড়ির ভিতরে সিসি টিভির ফুটেজে তাদেরকে চিনতে পারবে বলে তাদের সিসি টিভি ভেঙ্গে হার্ডডিক্সটি বের করে নিয়ে গিয়েছে, যেন তাদের কোন তথ্য বের করতে না পারে। তার পরিবারের সবাই লুকিয়ে ছিলেন। কোটা সংস্কারের জন্য ছাত্র-ছাত্রীরা আন্দোলন করতে পারে। তাদের আন্দোলন করার অধিকার আছে। কোটা সংস্কার নিয়ে বিবেচনা করা হবে, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী ৭ তারিখ পর্যন্ত সময় নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক জনসভায় একটি কথা বলেছিলেন যে, যেখানে কোটার দ্বারা চাকরিতে পদ পূরণ না হলে, সেখানে মেধার দ্বারা পূরণ করা হবে। যেমন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা পদে চাকরির জন্য যেখানে এইসএসসি পরিক্ষা পাশ করলে তারা প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক হতে পারছে। সেখানে মেয়েদের জন্য কত বড় সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। কারণ, ছেলেদের সংখ্যা বেশি এবং মেয়েদের সংখ্য কম। যে কারণে এ সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বড় বড় চাকরির ক্ষেত্রে মেয়েদের সংখ্যা খুবই কম, যে কারণে মেয়েদের কোটা থাকলে তারা সেই ছেলেদের সম পরিমানে উঠতে পারবে । এবং মেয়েরা ভাল পজিশনে যেতে পারবে। সেখানেও বলা হয়েছে যদি কোটায় পূরণ না হয়, তাহলে সেখানে মেধার দ্বারা টিকে থাকবে। সেখানে তারা আগে চাকরি পাবে। একোটা ব্যবস্থা করা হয়েছিল, সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন। একোটার জন্য সব দিক থেকে একজন মানুষকে সুযোগ দেওয়া হয় না। একটি মানুষ যদি কোটার জন্য পড়ালেখার সুযোগ পায়, তাহলে চাকরির ক্ষেত্রে সুযোগ পাবে না। চাকরির ক্ষেত্রে সুযোগ পেলে পড়াশোনার ক্ষেত্রে সুযোগ পাবে না। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকার এ কোটার বিষয় নিয়ে কঠোর ভাবে দেখছেন। আগামি ৭ তারিখের মধ্যে কোটা নিয়ে বিবেচনা করা হবে। বর্তমান সরকারতো বলেনি, আমরা তাদের দাবি মানব না, বা মানি না। সরকার তো বলেছে, তাদের কোটার বিষয় নিয়ে আমরা বিবেচনা করব। কিন্তু আমি বলতে চাই, এই কোটা সংস্কারের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কোন সম্পর্ক নেই। তাহলে কেন কিছু মুখোশ ধারি ব্যক্তিরা তার বাসায় হামলা করলো? এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের দিনে যারা অশুভ কাজ করছেন, তাদের প্রতি আমি নিন্দা জানাই। ছাত্র-ছাত্রীরা যৌক্তিক বলে আন্দোলন করতে পারে কিন্তু তারা ভিসির বাড়িতে ভাংচুর করতে পারে না।
পরিচিতি : উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য, আওয়ামী লীগ/ মতামত গ্রহণ : রাশিদুল ইসলাম মাহিন / সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ