ভারত মহাসাগরে প্রবেশ করছে চীন
সাউথএশিয়ান মনিটর : গত কয়েক বছরে ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতির সীমাবদ্ধতা তুলে ধরেছে মালদ্বীপ। কিন্তু এখানে আরও বড় ভূ-রাজনৈতিক বিষয় রয়েছে মালদ্বীপের সঙ্কট থেকে যেটার ব্যাপারে ধারণা করা যায়। চীন ও ভারত যে মহাসাগরে একটা সঙ্ঘাতের দিকে এগুচ্ছে, মালদ্বীপের পরিস্থিতি সেটার দিকেই অঙ্গুলি নির্দেশ করছে। এই সম্ভাব্য সঙ্ঘাতের একটা কারণ হলো ভারত মহাসাগরে ভারতের প্রভাবাধীন একটা দেশের চীনের প্রভাব বলয়ে চলে যাওয়া। ইয়ামিন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই ‘ভারত প্রথম’ নীতির ব্যাপারে অনীহা এসেছে মালদ্বীপের এবং ভারতের উদ্বেগের তোয়াক্কা না করে খোলামেলাভাবেই চীনা বলয়ে প্রবেশ করেছে দ্বীপরাষ্ট্রটি।
মালদ্বীপের বর্তমান সাংবিধানিক সঙ্কট ভারতের জন্য একটা অন্য রকম চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। ১৯৮৮ সালে ভারতের হস্তক্ষেপে সঙ্কট থেকে মুক্তি পেয়েছিল মালদ্বীপ। কিন্তু তার পর থেকে পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে সে ধরণের হস্তক্ষেপ কঠিন হয়ে গেছে। মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ ভারতের প্রতি মালদ্বীপে সামরিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানানোর পর মালদ্বীপের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান দেখানোর যে আহ্বান জানিয়েছে চীন, তা ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে চীনের প্রভাবের একটা প্রতীক হিসেবে ফুটে উঠেছে। চীনের সার্বভৌমত্বের প্রসঙ্গ তোলাটাকে যতই স্ববিরোধী মনে হোক, এ যাত্রায় মালদ্বীপে সামরিক বাহিনী নিয়ে ভারতের প্রবেশ আর আগের মতো সহজ হবে না।
বিগত কয়েক বছরে মালদ্বীপে নিজেদের অবস্থানকে যথেষ্ট শক্তিশালী করে তুলেছে চীন, যার মাশুল দিতে হচ্ছে ভারতকে। ২০১১ সাল পর্যন্ত মালদ্বীপে চীনের দূতাবাস পর্যন্ত ছিল না। এই তথ্যটি বিবেচনা করলে বোঝা যায়, কত দ্রুত সেখানে নিজেদের অবস্থান সংহত করেছে চীন।
ইয়ামিনের কাছে নাশিদ সরকারের পতনের পর মালদ্বীপের চীন-প্রীতির বিষয়টি আড়াল করা কঠিন হয়ে গেছে। ২০১৩ সালের পর থেকে চীন এবং চীনা কোম্পানির কাছে বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ তুলে দিয়েছে মালদ্বীপ আর এই সব ক্ষেত্রেই বঞ্চিত হয়েছে ভারত। মালদ্বীপ সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে চীনকে যে জমির মালিকানা সত্ত্ব দিয়েছে এবং যে দুই দেশের মধ্যে যে বিতর্কিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে, সেখানেও যথেষ্ট লাভবান হয়েছে চীন। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ