শূন্য হয়ে আসছে রিজার্ভ, ভয়াবহ পানি সঙ্কটের দিকে ভারত
সাউথএশিয়ান মনিটর : দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউন শহর এখন দিন গুনছে কারণ ‘ডে জিরো’ বা পানি সঙ্কটের দিন সেখানে দ্রুত এগিয়ে আসছে, যেদিন সেখানকার সব পানির কল পুরোপুরি শুকিয়ে যাবে। কিন্তু নতুন স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা গেছে, আরও নতুন চারটি দেশ একই পরিণতির দিকে এগুচ্ছে। দেশগুলো হলো ভারত, মরক্কো, ইরাক ও স্পেন।
যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইন্সটিটিউট নতুন স্যাটেলাইট ইমেজ তৈরি করেছে যেগুলো পৃথিবীর ৫ লাখ পানির আধার পর্যবেক্ষণ করে। তাদের প্রাপ্ত তথ্য মতে কেপটাউনের পর এই চারটি দেশে পানির রিজার্ভ শূন্যে নেমে আসবে। আবহাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, আসছে গ্রীষ্মে ভারতে মারাত্মক পানি সঙ্কটের সৃষ্টি হতে পারে। প্রায় ৪০৪টি জেলায় ২০১৭ সালের অক্টোবরের পর থেকে যথেষ্ট বৃষ্টিপাত না হওয়ায় চরম শুকনো অবস্থা বিরাজ করবে। টাইমস অব ইন্ডিয়া এক রিপোর্টে এ তথ্য জানিয়েছে। গ্রীষ্মকালে দেশের অধিকাংশ জায়গাতেই পানি সঙ্কট দেখা দেয়। কিন্তু এ বছর পরিস্থিতি অবনতির কারণ হলো শীতের সময় যথেষ্ট বৃষ্টি হয়নি।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, ভারতে চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ৬৩ শতাংশ কম হয়েছে বৃষ্টি। মার্চের শুরু থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বৃষ্টি কম হয়েছে ৩১ শতাংশ।
জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ যাচাই করে দেখা গেছে ৪৭২ জেলায় সামান্য থেকে চরম শুষ্ক অবস্থা বিরাজ করছে। আর ১৫৩ জেলার শুষ্ক অবস্থা চরম থেকে আরও চরমতর পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই জেলাগুলোর বেশিরভাগের অবস্থান উত্তর, মধ্য ও পশ্চিম ভারতে। অধিকাংশ জেলা পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ এবং রাজস্থানে ছড়িয়ে আছে। পূর্বদিকের রাজ্য বিহার ও ঝাড়খ-ে সামান্য কিছু জেলায় খরা এ পর্যায়ে পড়বে। তবে, দক্ষিণের উপকূলীয় তামিলনাড়ু ১৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খরার কবলে পড়েছে।
ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও ভারত পৃথিবীতে প্রথম। পুরো পৃথিবীতে যে পরিমাণ ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহার করা হয়, তার ২৫ শতাংশই করে ভারত। ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়া ভারতে পানিসঙ্কটের অন্যতম প্রধান কারণ। কিছু জায়গায় পানির স্তর বছরে এক মিটারেরও বেশি নেমে গেছে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে গুজরাট। সেখানে ভূ-গর্ভস্থ পানি গৃহস্থালির কাজে, সেচ ও শিল্প কারখানায় ব্যবহার করা হচ্ছে। এই রাজ্যে ভূ-গর্ভস্থ পানির ৬৮ শতাংশ এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ