এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস চক্রের ২ সদস্য আটক
সুজন কৈরী: রাজধানীর মহাখালী এলাকা থেকে চলমান এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে র্যাব-১। আটককৃতরা হলেন মো. আল আমিন (২০) ও মো. বায়োজিদ (১৯)। গতকাল সন্ধ্যায় পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব জানায়, গতকাল মহাখালী টিএন্ডটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে অভিযান চালিয়ে ওই দুইজনকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসে ব্যবহৃত ৪ টি মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞসাবাদে জানা যায় যে, আল আমিন নারায়ণগঞ্জের পাঁচরক্ষী বেগম আনোয়ারা ডিগ্রী কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র। চলতি বছর কিশোরগঞ্জের রিয়াদ (২০) নামের একজনের মাধ্যমে হোয়াটসঅ্যাপ আইডি খুলে প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু করে। সে ফেসবুকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে বিভিন্ন পোষ্ট দিলে ছাত্রছাত্রীরা মেসেজ দিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করত। চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ৮-১০ টি পরীক্ষার প্রশ্ন বিতরন করে মোটা অংকের টাকা আয় করে। তবে তার দেওয়া প্রশ্ন এবং পরীক্ষার প্রশ্ন পৃথক ছিল। সে বিভিন্ন লিংক থেকে প্রশ্নপত্র ডাউনলোড করে ফেসবুকে পোষ্ট দিত এবং ছাত্রছাত্রীদের নিকট থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিয়ে তাদের প্রশ্ন বিতরণ করার পরে ফাঁসকৃত প্রশ্নগুলো ফেসবুক থেকে ডিলেট করে দিত। আটক টাঙ্গাইলের বায়োজিদ সিরাজকান্দি দাখিল মাদ্রাসা থেকে গত বছর এসএসসি পাশ করে। চলতি বছর ময়মনসিংহের অর্ণব নামের একজন তাকে অর্ণব খাঁন নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে অনলাইনে প্রশ্নফাঁসের কাজে যুক্ত করে। চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় সে ৬ টি পরীক্ষার প্রশ্নের পোষ্ট দেয় এবং ছাত্রছাত্রীদের কাছে প্রশ্ন অনলাইনে বিতরণ করে বিকাশের মাধ্যমে টাকা আয় করে। তবে তার দেওয়া প্রশ্ন এবং পরীক্ষার প্রশ্ন পৃথক ছিল। তার মোবাইল বিশ্লেষন করে জানা যায়, সে মো. সাগর খান নামক আইডি থেকে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করত। ওই আইডি সাগর নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করে বলে বায়োজিদ জানিয়েছে।
র্যাব জানায়, আটককৃতদের দেয়া পোষ্ট দেখে অনেক সুযোগ সন্ধানী শিক্ষার্থী প্রলোভনে পড়ে প্রশ্নপত্র পাওয়ার আকাঙ্খায় বিকাশের মাধ্যমে তাদেরকে নির্দিষ্ট পরিমান টাকা পাঠাতো। এক্ষেত্রে তাদের ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপের বিভিন্ন লিংক বা গ্রুপ থেকে প্রাপ্ত প্রশ্নপত্র সরবরাহ করত। আবার কখনো পূর্বের বিভিন্ন বোর্ড পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কাটছাট করে, এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে নিজেরাই প্রশ্নপত্র তৈরি করে সরবরাহ করত। এভাবে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করে তারা বিভিন্ন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বিকাশ ও বিভিন্ন পন্থায় বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করেছে।